Monday 30 October 2017

৪৩১ পাকিস্তানি হিন্দুকে দীর্ঘমেয়াদী ভিসা, দেওয়া হবে প্যান ও আধার কার্ড

ওয়েবডেস্কঃ- ৪৩১ পাকিস্তানি হিন্দুকে ভারতে থাকার জন্য দীর্ঘমেয়াদী ভিসা দিল কেন্দ্র। এর ফলে, ওই নাগরিকরা এদেশে প্যান ও আধার কার্ড পাওয়ার যোগ্য হলেন। একইসঙ্গে, তাঁরা এদেশে জমি-বাড়িও কিনতে পারবেন।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তিন প্রতিবেশী রাষ্ট্র—পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশে যে সকল সংখালঘুরা নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে আসছেন, তাঁদের সহায়তা করার অঙ্গীকার নিয়েছে মোদি প্রশাসন। এই তালিকায় রয়েছে—হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন এবং খ্রিষ্ট্রান সম্প্রদায়ের মানুষ।

গতমাসে ৪৩১ জন পাক হিন্দুদের এদেশে দীর্ঘমেয়াদী ভিসা দেওয়া হয়েছে। মোদী প্রশাসনের দেওয়া এই ভিসার ফলে ধর্মীয় কারণে পালিয়ে আসা ব্যক্তিরা নিজেদের থাকার জন্য জমি বা ফ্ল্যাট কিনতে পারবেন। পাশাপাশি, এই আগতরা এদেশে প্যান, আধার কার্ড এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করাতে পারবেন। যাতে এঁদের কর্মসংস্থান হয় বা স্বরোজগার অথবা ব্যবসা করতে পারেন।

তবে, আইন অনুযায়ী, এঁরা সামরিক প্রতিষ্ঠানসহ সংরক্ষিত স্থানের নিকটে তাঁরা কোনও সম্পত্তি কিনতে পারবেন না।
-লাইভমিন্ট

এবার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিবেশী

ওয়েবডেস্কঃ- ডেঙ্গির সমস্যাতে জেরবার পশ্চিমবঙ্গ। ডেঙ্গি প্রতিরোধে প্রশাসনের উদাসীনতাও অনেক জায়েগাতে চোখে পড়েছে। ব্লিচিং-র জায়েগাতে আটা ছড়ানোর মত ঘটনাও সামনে এসেছে। ঐ এলাকার তৃণমূল দলের সাংসদ যদিও ডেঙ্গির প্রতিরোধ করতে অক্ষম প্রশাসন নয়ে, ডেঙ্গির জন্য ওপরওয়ালা-কেই দায়ি করেছেন। বিরোধি দল গুলো রোজই প্রায়ে এই জন্য মমতা বন্দোপাধ্যায়-কে দায়ী করছেন। মমতা বন্দোপাধ্যায় আবার ডেঙ্গির জন্য ভিন রাজ্য থেকে আসা মশাদের দায়ী করেছেন। বিজেপি থেকে ডেঙ্গি প্রতিরোধে ব্যর্থ বলে কলকাতার মেয়রকে ডেঙ্গিশ্রি বলে ব্যঙ্গও করেছে।

এসব বাদ বিতণ্ডার মধ্যেই সামনে এল এক চাঞ্চল্যকর খবর। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পাড়াতেই এবার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলেন এক মহিলা। আক্রান্তের নাম রিঙ্কি দাশগুপ্ত, বয়স ৩২। রিঙ্কি দেবি থাকেন কালীঘাট রোডে যা মুখমন্ত্রীর বাড়ি হরিশ মুখার্জী স্ট্রীটের একদমই সামনে। পাড়ার লোকেরা জানিয়েছেন পূজার আগে এই পাড়ার বেশ কয়েকজন ম্যালেরিয়াতে আক্রান্ত হয়েছিল। পূজার পর রিঙ্কি দেবিই প্রথম যিনি ঐ পাড়াতে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলেন।

এলাকার কাউন্সেলর শ্রী রতন মালাকার এক বাংলা সংবাদ পত্রকে জানিয়েছেন, পাড়াতে আপাতত মাত্র একজনই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত, ডেঙ্গি প্রতিরোধের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আক্রান্তের বাড়িতে গিয়েছেন পুরকর্মীরা।

তবে মুখ্যমন্ত্রীর পাশের পাড়ার মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার পর তৃণমূল যে বেশ অস্বস্তিতে তা আর বলে বোঝানোর দরকার নেই। কিন্তু এখন দেখার বিষয় হল কতদিনে এই ডেঙ্গিকে নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হয়ে তৃণমূল সরকার।

Saturday 28 October 2017

কেন বিদেশি বর্বর তুর্কিরা ধ্বংস করেছিল নালন্দা মহাবিদ্যালয়কে??

ওয়েবডেস্কঃ- পাল শাসনকালে বৌদ্ধধর্মের প্রথাগত মহাযান ও হীনযান সম্প্রদায়ে গোপন আচার-অনুষ্ঠান ও জাদুবিদ্যা-কেন্দ্রিক তান্ত্রিক ক্রিয়াকর্ম অন্তর্ভুক্ত হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে বৈষ্ণব ও শৈব দার্শনিকদের আবির্ভাব এবং ১১শ শতাব্দীতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পাল রাজবংশের রাজ্যচ্যুতির ঘটনা থেকেই বোঝায় যায় যে, সেই সময় বৌদ্ধধর্মের উপর রাজনৈতিক, দার্শনিক ও নৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়ছিল। কিন্তু সেই সময়ও ভারতের কয়েকটি বৌদ্ধ মঠের উত্থান বৌদ্ধধর্মের অস্তিত্ব বজায় রেখেছিল। খ্রিস্টীয় ১৩শ শতাব্দীতে মুসলমানেরা সেগুলি আক্রমণ করে। সেইটিই ছিল ভারতে বৌদ্ধধর্মের উপর শেষ আঘাত।

খ্রিস্টীয় ১৩শ শতাব্দীতে তুর্কি গোষ্ঠীপতি বখতিয়ার খিলজি অবধের সেনানায়ক নিযুক্ত হয়। ফারসি ইতিহাসবিদ মিনহাজ-ই-সিরাজ তাঁর তাবাকাত-ই-নাসিরি গ্রন্থে পরবর্তী কয়েক দশকে বখতিয়ার খিলজির লুটতরাজের বিবরণ নথিভুক্ত করেছেন। বিহার সীমান্তের দুটি গ্রাম খিলজির হাতে সমর্পিত হয়েছিল। এই গ্রামদুটি রাজনৈতিকভাবে কার্যত মালিকানাহীন অঞ্চলে পরিণত হয়। সুযোগ বুঝে খিলজি বিহারে লুটতরাজ শুরু করেন। তাঁর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাঁকে এই কাজের জন্য স্বীকৃতি ও পুরস্কার দুইই দেন। এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে খিলজি বিহারের একটি দূর্গ আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন এবং সেটি দখল করতে সক্ষমও হন। এই দূর্গ থেকে তিনি প্রচুর ধনসম্পত্তি লুট করেন। তাবাকাত-ই-নাসিরি গ্রন্থে এই লুণ্ঠনের বিবরণ পাওয়া যায়:

"মুহাম্মদ-ই-বখত-ইয়ার সাহসের সঙ্গে খিড়কি দরজা দিয়ে সেই স্থানে প্রবেশ করেন, দূর্গটি দখল করেন এবং প্রচুর সামগ্রী লুট করেন। সেই স্থানের অধিকাংশ বাসিন্দাই ছিলেন ব্রাহ্মণ এবং এই সকল ব্রাহ্মণদের সকলেরই মস্তক ছিল মুণ্ডিত। তাঁদের সকলকে হত্যা করা হয়। সেখানে প্রচুর বই ছিল। বইগুলি দেখতে পেয়ে মুসলমানেরা কয়েকজন হিন্দুকে আদেশ দেয়, তারা যেন সেই বইগুলি সম্পর্কে তাদের তথ্য দেয়। কিন্তু সকল হিন্দুকেই হত্যা করা হয়েছিল। [বইগুলির বিষয়বস্তু সম্পর্কে] অবহিত হওয়ার পর জানা যায়, সেই দূর্গ ও শহরটি ছিল একটি মহাবিদ্যালয়। হিন্দুদের ভাষায় তাঁরা সেটিকে বলতেন একটি মহাবিদ্যালয় [مدرسه] বিহার।"

উপরিউক্ত উদ্ধৃতিতে একটি বৌদ্ধ মঠ (বিহার) ও তার ভিক্ষুদের (মুণ্ডিতমস্তক ব্রাহ্মণ) উপর আক্রমণের কথা বলা হয়েছে। এই ঘটনার সঠিক তারিখটি জানা যায় না। গবেষকদের মতে, এই ঘটনাটি ঘটেছিল ১১৯৭ থেকে ১২০৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী কোনও এক সময়ে। অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন, যে মঠটিকে দূর্গ বলে ভুল করা হয়, সেটি ছিল ওদন্তপুরা। 

তবে কয়েকজনের মতে, সেই মঠটি ছিল নালন্দা। এও মনে করা হয়, যেহেতু দুটি মহাবিহারই কয়েক মাইলের ব্যবধানে অবস্থিত ছিল, সেহেতু উভয়ের ক্ষেত্রেই একই ঘটনা ঘটেছিল। সেই যুগের অপর দুই মহাবিহার বিক্রমশিলা ও পরে জগদ্দল একই সময়ে তুর্কিদের হাতেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।

এই সময়কার ঘটনাবলির একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবরণ হল তিব্বতি ভিক্ষু-তীর্থযাত্রী 'ধর্মস্বামীর' জীবনী। তিনি ১২৩৪ থেকে ১২৩৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ভারতে আসেন। ১২৩৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি যখন নালন্দা দর্শন করেন, তখনও এই মহাবিহারটি চালু ছিল। তবে লুণ্ঠিত নালন্দার অবস্থা তখন ছিল শোচনীয়। তুর্কি মুসলমানেরা নালন্দার অধিকাংশ ভবনেরই ক্ষতিসাধন করেছিল এবং সেগুলি ভগ্নপ্রায় অবস্থায় পড়ে ছিল। দুটি বিহার তখনও ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় ছিল। তিনি ধর্মস্বামী এই দুটি বিহারের নাম ‘ধনব’ ও ‘ঘুনব’ হিসেবে উল্লেখ করেন। সেখানে রাহুল শ্রীভদ্র নামে এক নবতিপর শিক্ষক ৭০ জন ছাত্রকে শিক্ষাদান করতেন। 

'ধর্মস্বামী' মনে করতেন, কুসংস্কারগত কারণে মহাবিহারটিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়নি। কারণ, নালন্দা চত্বরের জ্ঞাননাথ মন্দিরটি অপবিত্র করার পরেই এক মুসলমান সেনা অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।

'ধর্মস্বামী' ছয় মাস রাহুল শ্রীভদ্রের কাছে নালন্দায় অধ্যয়ন করেন। কিন্তু তিনি নালন্দার ঐতিহাসিক গ্রন্থাগারটির কথা উল্লেখ করেননি। সম্ভবত তুর্কি আক্রমণের ফলে সেটি সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল। তবে তিনি নালন্দার উপর আরেকটি আক্রমণের প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। নিকটবর্তী ওদন্তপুরা (অধুনা বিহার শরিফ) তখন একটি সামরিক প্রধান কার্যালয়ে রূপান্তরিত হয়েছিল। সেখানকার সৈন্যেরা নালন্দা আক্রমণ করেন। কেবলমাত্র 'ধর্মস্বামী' ও তাঁর শিক্ষকই রয়ে যান এবং তাঁরা লুকিয়ে পড়েন। অন্য ভিক্ষুরা নালন্দা ছেড়ে পালিয়ে যান। সমসাময়িক তথ্যসূত্রের সমাপ্তি এখানেই ঘটেছে। আর পরিস্কার ভাবে বোঝা যায়ে বিদেশ থেকে ভারত লুঠ করার মানসিকতা নিয়ে আগত বর্বর এবং শিক্ষার মর্ম বুঝতে অপারগ তুর্কি মুসলমানদের হাতেই ধ্বংস হয়ে তথকালিন পৃথিবীর বৃহত্তম মহাবিদ্যালয় নালন্দা।


তথ্যঃ- বাংলা উইকিপেডিয়া

ভাঙা হোক লেনিনের সব স্মৃতিসৌধ, চাইছে খোদ রুশ বাসিন্দারা

 
প্রতিকি ছবি

ওয়েবডেস্কঃ- রেড স্কয়ারে কমিউনিস্ট নেতা ভ্লাদিমির লেনিনকে আর দেখতে চান না তারা। তাদের কথা মত, লেনিনের দেহ এবং মূর্তি গুলোকে কে রেড স্কয়ার থেকে সরিয়ে দিলেই ঈশ্বরের আশীর্বাদ পাবে রাশিয়াবাসি। শুধু তাই নয়, রাশিয়া জুড়ে তৈরি লেনিনের স্মরণে নির্মিত সৌধগুলোও ভেঙে ফেলার দাবি করা হয়েছে।


এমন দাবি করেছে রাশিয়ান খ্রিস্টানদের একটি সংগঠন "দ্য রাশিয়ান অর্থোডক্স চার্চ আউটসাইড রাশিয়া" বা  রোকর। রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম রাশিয়ান টাইমস (আরটি) এই সংবাদটি প্রকাশি হয়েছে।


রাশিয়ার রাজধানীর মস্কোর প্রাণকেন্দ্র রেড স্কয়ার। এ এলাকাটির সঙ্গে জুড়ে আছে নানা ইতিহাস। এ এলাকাতেই রাখা আছে মানব ইতিহাসের প্রভাবশালী নেতাদের একজন ভ্লাদিমির লেনিনের দেহ। তবে লেনিনকে আর রেড স্কয়ারে চায় না ওই রাশিয়ানদের ঐ সংগঠনটি।


রোকর দেওয়া বিবৃতিতে লেনিনকে ‘বিশ শতকের উৎপীড়ক, নির্যাতনকারী’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। তাঁর স্মৃতিতে নির্মিত সৌধগুলো নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার দাবি করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এর মাধ্যমেই রাশিয়ার মানুষ ঈশ্বরের সঙ্গে মিলতে পারবে।’ 'রোকর' একটি প্রায় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। ১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের পর তা প্রতিষ্ঠিত হয়। 

রেড স্কয়ারে লেনিনের দেহ থাকা না থাকা নিয়ে অনেক আগেই বিতর্ক শুরু হয়। তবে নভেম্বর বিপ্লবের শতবার্ষিকীর আগে বিষয়টি আবার উসকে দেওয়া হল।


গত বছর রাশিয়ার সরকারের একটি সার্ভে প্রতিষ্ঠান ওই বিষয়টি নিয়ে সার্ভে করে। সেখানে দেখা যায় ৬০ শতাংশ রাশিয়ানই চান লেনিনকে এবার সমাহিত করা হোক।  সরানো হোক রেড স্কয়ার থেকে। ৩৬ রাশিয়ান শতাংশ মনে করেন আরো কিছু সময় অপেক্ষা করা যায়; অন্তত আরেকটা প্রজন্ম দেখুক। বাকিরা চান ক্রেমলিনের কাছে সমাধিক্ষেত্রে রাখা হোক।

সোনিয়া গান্ধীর উপদেষ্টার ISIS জঙ্গিকে মদত, অভিযোগ অস্বীকার কংগ্রেসের

ওয়েবডেস্কঃ- গুজরাতের প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা এবং সোনিয়া গান্ধীর উপদেষ্টা আহমেদ প্যাটেল যে হাসপাতালের ট্রাস্টি ছিলেন, সেই হাসপাতালের ল্যাব টেকনিশিয়ান পদে কাজ করা এক ব্যক্তিকে ISIS জঙ্গি যোগের অভিযোগে গ্রপ্তার করেছে গুজরাত পুলিশ। গত শুক্রবার এমনটাই দাবি করলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি। অভিযুক্তকে ওই হাসপাতাল থেকেই ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। যদিও আহমেদ প্যাটেল কিংবা কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রীর ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের দাবি, ডিসেম্বরে ভোটে তাই গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে মেরুকরণের চেষ্টা করছেন। ISIS জঙ্গিদের সঙ্গে কংগ্রেস তথা আহমেদ প্যাটেলের নাম যোগ করা হচ্ছে।
গুজরাটের আহমেদাবাদ শহরে বসবাসকারী ইহুদী দের ধর্মীয় স্থান "আব্রাহাম সাইনাগগে" হামলার প্রস্তুতির নিচ্ছিল  কাসিম স্টিম্বারওয়ালা এবং উবেইদ বেগ নামক দুই যুবক। দিন তিনেক আগে এই দুজনকে গ্রেফতার করে গুজরাত পুলিশের অ্যান্টি টেরর স্কোয়াড। পুলিশের তরফ থেকে আদালতে জানানো হয়েছে, ধৃত কাসিম স্টিম্বারওয়ালা এবং উবেদ বেগ হামলার জন্য পিস্তল কেনার চেষ্টা চালাচ্ছিল। 
ISIS জঙ্গি যোগে অভিযুক্ত কাসিম স্টিম্বারওয়ালাই আঙ্কেলেশ্বরের "সর্দার প্যাটেল হাসপাতাল"-র ইকো কার্ডিওগ্রাম টেকনিশিয়ান হিসাবে কাজ করতো। সেই হাসপাতালের ট্রাস্টি বোর্ডের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন কংগ্রেস নেতা এবং সোনিয়া গান্ধীর উপদেষ্টা আহমেদ প্যাটেল। পুলিশ জানিয়েছে "আব্রাহাম সাইনাগগে" আক্রমণ চালিয়ে জামাইকা পালিয়ে যাওয়ার জন্য ওয়ার্ক ভিসাও যোগার করেছিল সে। 
যদিও কংগ্রেস এই সব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। আহমেদ প্যাটেলের সঙ্গে সব রকমের জঙ্গি(ISIS) যোগকে অস্বীকার করে তাদের দাবি, ধৃতের বিরুদ্ধে খুব তাড়াতাড়ি তদন্ত শুরু করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। 
সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে, গ্রেফতার প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি বলেন, আহমেদ প্যাটেলের পদত্যাগ করা উচিত। তিনি বলেন, যদি এই দুজন জঙ্গিকে গ্রেফতার না করা হত, তাহলে কী অবস্থা হতো, চিন্তা করে দেখুন। এই বিষয়ে আহমেদ প্যাটেল, রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেসকে তাঁদের বক্তব্য পরিষ্কার করা উচিত বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি।

Friday 27 October 2017

দাবিঃ নামাজ পড়লে শিবের প্রার্থনাও করতে দিতে হবে তাজমহলে



ওয়েবডেস্কঃ- তাজমহল নিয়ে শেষই হচ্ছে না বিতর্ক। এবার তাজমহলে শুক্রবারের নামাজ বন্ধ করার দাবি উঠিয়েছে 'অখিল ভারতীয় ইতিহাস সংকলন সমিতি' নামক এক সংগঠন। সংঠনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, তাজমহলে নামাজ পাঠ বন্ধ করা হোক, না হলে ওখানে শিবের প্রার্থনাও করতে দিতে হবে”।

মুসলিমদের দাবি মত প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের সময় পর্যটকদের জন্য বন্ধ থাকে তাজমহল। সেই বিষয়কেই উল্লেখ করে অখিল ভারতীয় ইতিহাস সংকলন সমিতির শীর্ষ নেতা, ডক্টর বালমুকুন্দ পান্ডে বলেন, তাজমহল ভারতের জাতীয় ঐতিহ্য। কেন সেটা শুধুমাত্র মুসলমানদের ধর্মীয় স্থান হিসেবে ব্যবহার করা হবে? ওখানে নামাজ পড়ার অনুমতি প্রত্যাহার করা হোক। আর নামাজ পড়া যদি বন্ধ করা না যায়, তাহলে হিন্দুদেরও তাজমহলে শিবের প্রার্থনা করতে দিতে হবে”।

একাধিক প্রমাণ সমেত বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন অনেকদিন ধরেই তাজমহলকে হিন্দু মন্দির ভেঙ্গে তৈরি বলে দাবি করেছে। কদিন আগেই "হিন্দু যুবা বাহিনী" নামে একটি সংগঠন তাজমহলে শিবের প্রার্থনা করে। ওই সংগঠনটিও দাবি করে, তাজমহল আসলে শিবমন্দির। ওই শিবমন্দিরকে কবরখানার চেহারা দেন শাহজাহান।

গত বৃহস্পতিবার তাজমহল সফর করেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগি আদিত্যনাথ। তখন সেখানে উপস্থিত জনগণ হঠাতই জয় শ্রী রামধ্বনি দিতে শুরু করে দেয়।

Thursday 26 October 2017

সমীক্ষাঃ হিমাচল হারাতে চলেছে কংগ্রেস, ভোটে জিতছে বিজেপি

ওয়েবডেস্কঃ- ভোটের দামামা বেজেই গিয়েছিল অনেক দিন আগে। এবার ভোট গ্রহণের জন্য আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। তাই প্রথা মাফিক শুরু হয়ে গিয়েছে ওপিনিয়ন পোল। প্রথম ধাপের ওপিনিয়ন পোল অনুযায়ী হিমাচল প্রদেশে এগিয়ে বিজেপি। অনেকটাই পিছিয়ে গেছে কংগ্রেস। India Today Axis-My India poll-র সমীক্ষা অনুযায়ী সামনে এসেছে এই তথ্য।

নভেম্বরের ৯ তারিখ ভোট গ্রহণ হবে হিমাচল প্রদেশে,  আর তার মাত্র দুই সপ্তাহ আগেই এমন সমীক্ষা সামনে আসাতে বেশ চাপেই কংগ্রেস শিবির। হিমালয়ের কোলে থাকা এই রাজ্যে মোট ৬৮টা আসন রয়েছে। সমীক্ষা অনুযায়ী মোটামুটি ৪৩ থেকে ৪৭ টা আসন পেতে পারে বিজেপি। অপর দিকে কংগ্রেস পেতে পারে ২১ থেকে ২৫ টা আসন এবং ০-২ টি আসনে জেতার সম্ভবনা রয়েছে অন্যান্যদের। 



সমীক্ষাটি অনুযায়ী ভোট শেয়ারের দিক থেকেও বাকিদের থেকে অনেক এগিয়ে বিজেপি। মোট ভোটের প্রায়ে ৪৯% পেতে পারে বিজেপি একাই। কংগ্রেস খুব বেশি হলে ৩৮% পেতে পারে। অন্যান্য রাজনৈতিক দল গুলো সন্মিলিত ভাবে পেতে পারে ১৩% ভোট।

অনেকেই মনে করছেন গুজরাটকে অত্যাধিক প্রাধান্য দেওয়ার জন্য হিমাচলকে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি, গান্ধী পরিবারের উত্তরসূরি, রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে চলা কংগ্রেসে দল। আর তার ফলেই হিমাচলে ক্ষয় ক্ষতির সন্মুখিন হতে হচ্ছে শতাব্দী প্রাচীন রাজনৈতিক দল কংগ্রেসকে।

Tuesday 24 October 2017

দেশ থেকে রোহিঙ্গা তাড়ানোর দাবিতে কলকাতাতে হল বজরং দলের মহামিছিল

ওয়েবডেস্কঃ- ভারতবর্ষের সুরক্ষার জন্য সমস্যা হতে পারে এদেশে অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গা মুসলিমরা, তাই তাদের মায়ানমারে ফেরত পাঠানো উচিৎ। এদেশের একাধিক নিরাপত্তা সংস্থার রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু বাদ সাধছে ভারতের নোংরা রাজনীতি। বেশ কিছু কেন্দ্রীয় সরকারে থাকা রাজনৈতিক দল বিজেপি-র বিরোধিতা করে নিজেদের মুসলিম প্রেমী প্রমাণ করতে গিয়ে, কেন্দ্রীয় সরকারেরই বিরোধিতাতে লেগে পড়েছে। 

  সারা পৃথিবী এখন যেনে গেছে ধর্মের নামে দেশ ভাগ করতে গিয়েই রোহিঙ্গা মুসলিমদের এমন দুরবস্থা হয়েছে। যারা নিজের দেশের হতে পারেনি, তারা ভারতের হবে কি করে? এর উত্তর অবশ্য কারুর কাছেই নেই। রোহিঙ্গা মুসলিমদের মতই আফ্রিকা এবং আরবের উপদ্বীপের মুসলিমদের শরণার্থী হিসাবে পশ্চিম ইউরোপে ঠাই দেওয়ার ফল কি হয়েছে তা আমাদের সকলেরই জানা। কিন্তু এসব জেনে বুঝেও স্রেফ ভোট ব্যাঙ্কের জন্যই রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার সঙ্গে আপোষ করে, রাজনীতি করে চলেছে একাধিক তথা কথিত সেকুলার রাজনিতিক এবং বুদ্ধিজীবী।


  আর এই সবের বিরোধিতাতেই এবার পথে নামলো বিশ্ব হিন্দু পরিষদ তথা বজরং দল। উত্তর কলকাতার রাজপথে এক মহামিছিল করলো হিন্দুত্ববাদী এবং অখণ্ড ভারতপন্থী সংগঠন "বজরং দল"। উত্তর কলকাতার বরাহনগর বাজার থেকে শুরু হয়ে কাশিপুর রোড, বাগবাজার হয়ে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে শেষ হয় এই মিছিল। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সহ সভাপতি শ্রী চন্দ্রনাথ দাশ, বজরং দলের সংযোজক এবং আরও বিশিষ্ট ব্যাক্তিত্ব। বজরং দলের এতো বড় মিছিল এর আগে কবে কলকাতা দেখেছে তা মনে করে বলা খুব কঠিন। এই মহামিছিলে ব্যাপক সংখ্যক মানুষের অংশ গ্রহণই বুঝিয়ে দিচ্ছে, বাকি ভারতের মত এবার বাংলাতেও শিকড়কে যথেষ্ট মজবুত করেছে গেরুয়া সংগঠন।

 তথা বিশ্ব-হিন্দু পরিষদের এক সদস্যের থেকে জানা গেছে, এই মিছিলের মূল দাবি ছিল "দেশের আভ্যন্তরীন নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বকে অক্ষুন্ন রাখতে, মায়ানমারকে ধর্মের ভিত্তিতে ভাংতে চাওয়া রোহিঙ্গা মুসলিমদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করা হোক এবং ভারতে ঢুকে থাকা রোহিঙ্গা মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের, অবিলম্বে ভারত থেকে বিতাড়িত করা হোক।

রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়ে কলকাতাতে ফের মিছিল মুসলিম সংগঠনের

ওয়েবডেস্কঃ- রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যা করার প্রতিবাদে গতকাল কলকাতাতে জোট বেঁধে মিছিল করল ১৯ টি মুসলিম সংগঠন। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গীয় ইমাম পরিষদের সভাপতি রইসুদ্দীন পুরকাইত, সোশাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়ার রাজ্য সভাপতি তায়েদুল ইসলাম, ভাষা ও চেতনা মঞ্চের অধ্যাপক ইমামুল হক,অল ইন্ডিয়া ইমাম কাউন্সিল এর রাজ্য সভাপতি মৌলানা মিনারুল সেখ সহ অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। 

মিছিলের উদ্দেশ্য ছিল মায়ানমার কনস্যুলেট পর্যন্ত মিছিল করে গিয়ে সেখানে ডেপুটেসন জমা দেওয়া। যদিও মিছিল শুরুর কিছুক্ষণ পরেই মমতা প্রশাসনের পুলিশ মিছিল আটকে দেয়। এর পর উদ্যোগতাদের মধ্যে থেকে কয়েকজন মায়ানমার কনস্যুলেটে গিয়ে ডেপুটেসন জমা দিয়ে আসেন।

এই মিছিলের মূল দাবি গুলোর মধ্যে অন্যতম দাবি ছিল মায়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের আবার নাগরিকত্ত দিতে হবে মায়ানমারকে, অবিলম্বে রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যা বন্ধ করতে হবে। যদিও মনে রাখতে হবে মায়ানমারের রোহিঙ্গা প্রদেশে বসবাস করা রোহিঙ্গা মুসলিমদের ধর্মের নামে দেশ ভাঙতে চেয়ে লাগাতার আন্দোলন এবং মুজাহিদিন দল তৈরি করে জঙ্গিপনার জন্যই সেই দেশের প্রশাসন তাদের নাগরিকত্ত বাতিল করে দেয়। কারণ রোহিঙ্গা মুসলিমরা নিজেদের মায়ানমার বাসি হিসেবে মনেই করতো না। 

এখনের এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পিছনেও সম্পূর্ণ ভাবে বিচ্ছিন্নতাবাদি রোহিঙ্গা মুসলিম জঙ্গি সংগঠন আরসা(ARSA) দায়ী, কারণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মায়ানমার পুলিশের একাধিক ঘাটি আক্রমণ করে এবং বৌদ্ধ ও হিন্দু রোহিঙ্গাদের হত্যা করার পর থেকেই নতুন করে এই রক্তক্ষয়ী লড়াই শুরু হয়েছে। পাওয়া গেছে রোহিঙ্গা হিন্দুদের গণকবর। একাধিক আক্রান্তরা জানিয়েছে তাদের উপর আক্রমণ রোহিঙ্গা মুসলিমরাই করেছে। তবে বিচ্ছিন্নতাবাদি রোহিঙ্গা মুসলিম জঙ্গি সংগঠন আরসা(ARSA)-র বিরুদ্ধে কোন আওয়াজই এই মিছিল থেকে তোলা হয়েছে বলে শোনা জায়েনি।

Monday 23 October 2017

Pending উন্নয়নের বিরোধিতা করলে পয়সা দেওয়া হবে না : মোদি

ওয়েবডেস্কঃ- যেসব রাজ্য উন্নয়ন ও আর্থিক সংস্কারের বিরোধী তাদের এক পয়সা দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গুজরাটে 'রোল অন, রোল অফ ফেরি ' উদ্বোধনের পর একথা জানান মোদী।

তিনি আরও বলেন, জনগণের টাকা দেশের উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা উচিত তাই যে রাজ্য এগিয়ে আসবে তাদের সব রকম সাহায্য করা হবে, আর যে রাজ্য উন্নয়নের বিরোধীতা করবে তাদের এক পয়সাও দেওয়া হবে না। বলাই বাহুল্য "যে রাজ্য" কথাটির মধ্যে অন্যতম হল পশ্চিমবঙ্গ। এই রাজ্য ভারতের সম্ভবত একমাত্র রাজ্য যারা কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থে চলা কেন্দ্রীয় সরকারি প্রোজেক্ট গুলোর অনেক গুলোকেই রাজ্যের বলে চালায়ে। নোটবন্দির সময় একমাত্র এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই ব্যাঙ্কের লাইনে গিয়ে মানুষদের নতুন নোট না নেওয়ার আবেদন করেছিলেন, রাজ্যের অর্থমন্ত্রী দেশে জিএসটি চালু করার কমিটির অন্যতম সদস্য হওয়া সত্যেও মুখমন্ত্রি এবং দল জিএসটি বিরোধী প্রচার করেই চলেছে, এমন কি ১০০ দিনের কাজের টাকা সরাসরি উপভোক্তাকে দেওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে সার্বিক ভাবে নিন্দা করেছে।

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন কংগ্রেস আমলে সব সময়  গুজরাটের উন্নয়নে বাঁধা দেওয়া হয়েছে। আমি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রি থাকার সময় এই সমস্যা গুলির সম্মুখীন হয়েছিলাম। গুজরাটে শিল্প ও আর্থিক সমৃদ্ধি রুখে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আমি প্রধানমন্ত্রি হওয়ার পর গত তিন বছর ধরে গুজরাটের উন্নয়নকে যথেষ্ট গুরত্ব দিয়েছি।

Pending বাংলাদেশি মুসলিম তারাতে এবার উদ্যোগী যোগীর প্রশাসন

ওয়েবডেস্কঃ- ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে পশ্চিমবঙ্গের বারাসাত এবং নদীয়ার কৃষ্ণনগরে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন,"বাংলাদেশে অত্যাচারিত হয়ে পালিয়ে আসা শরণার্থীরা আমার পরিবার। তাঁরা ভারতে থাকবেন।  কিন্তু ফিরে যেতে হবে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের।" তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়ে সেই প্রতিশ্রুতি ভোলেন নি। অনেক রাজ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ করা মুসলিমদের চিহ্নিত করনের কাজ। তবে বলে রাখা ভাল, বাংলাদেশে অত্যাচারিত হয়ে পালিয়ে আসা হিন্দুদের, ভারতীয় নাগরিকত্ত দানের কাজ মোটেই সুষ্ঠু ভাবে করতে পারা জায়েনি বাম-কংগ্রেস-টিএমসি দের মত দল গুলোর বিরোধিতার জন্য।

সেই সময় নরেন্দ্র মোদীর প্রতিশ্রুতিকে সার্বিকভাবে সমর্থন জানানো যোগী আদিত্যনাথ এখন ভারতের সবথেকে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। আশানরূপ ভাবেই তাঁর প্রশাসন এবার উদ্যোগী হল নিজ রাজ্য থেকে বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে উত্তর প্রদেশ থেকে বের করে দিতে। বিজেপির যোগী আদিত্যনাথ সরকারের মন্ত্রিসভায় ইতিমধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েও গেছে। পশ্চিমবঙ্গ ত্রিপুরা ছাড়াও উত্তরপ্রদেশে প্রচুর বাঙালির বসবাস রয়েছে। 

উত্তর প্রদেশের রাজ্য সরকারের দাবি, তাদের রাজ্যে আট লাখ বাংলাদেশি রয়েছে। তাদের একটা বড় অংশই মুসলিম অনুপ্রবেশকারী। শুধুমাত্র তাদেরই উৎখাত করার লক্ষ্যে প্রতিটি জেলার পুলিশ সুপারদের বাংলাদেশিদের তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, এই বাংলাদেশি মুসলিমদের চিহ্নিতকরণ কাজ শুরু হচ্ছে। সেই তালিকা তৈরি করে পাঠানো হবে রাজ্য সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে। এরপরই এদের বিতাড়নের উদ্যোগ নেবে সরকার। এ প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগবে আগামী বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত।

তবে উত্তর প্রদেশের পুলিশের সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমে এ কথাও বলা হয়েছে, এই চিহ্নিতকরণ কাজ অত্যন্ত কঠিন। কারণ, উত্তর প্রদেশে রয়েছে প্রচুর বাঙালির বাস। অনুপ্রবেশ করা অনেকের কাছে আবার রয়েছে ভোটার কার্ড সহ আঁধার কার্ডও। বিভিন্ন উপায়ে তারা ঐসব জোগাড় করে নিয়েছে। তাই ভারতীয় যেসব বাঙালি উত্তর প্রদেশে কয়েক দশক ধরে বাস করছে, তাদের তো পুলিশ বাংলাদেশি বলে মনে করে হেনস্তা করতে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, কারও আঁধার কার্ড বা ভোটার পরিচয়পত্রে বাংলাদেশি মুসলিম বলে কোনো কথা নেই। মুখের ভাষাই মূল কথা।  উত্তর প্রদেশ হিন্দি ভাষাভাষী রাজ্য। এখানের অধিকাংশ পুলিশও বাংলা ভাষা জানেন না। ফলে তাদের পক্ষে বাংলাদেশি চিহ্নিতকরণ কাজ কঠিন হয়ে পড়তে পারে। তাই এখন দেখার বিষয় হল বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারী তাড়ানোর ষোলআনা ইচ্ছে যোগীর থাকলেও কাজটা সুষ্ঠু ভাবে করার জন্য তিনি কি উপায়ে বের করেন।

Pending আশঙ্কা, পাকিস্তানের চীনা রাষ্ট্রদূতকে আক্রমণ করতে পারে ইসলামিক জঙ্গিরা

ওয়েবডেস্কঃ- পাকিস্তানে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূতের উপর হামলা আশঙ্কা রয়েছে বলে পাক সরকারকে এমনটাই জানিয়েছে চীন। রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা অবিলম্বে বাড়ানোর দাবিও জানানো হল চীনের তরফ থেকে। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট (ইটিআইএম) পাকিস্তানে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূতকে খুন করার ছক কষেছে এবং তাঁকে খুনের উদ্দেশ্য নিয়ে এক জঙ্গি ইতিমধ্যেই পাকিস্তানে ঢুকেছে। চীনের তরফে এমনই জানানো হয়েছে পাক প্রশাসনকে।

রয়টার্সের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী সম্প্রতি পাকিস্তানে রাষ্ট্রদূত বদল করেছে চিন। এত দিন যিনি আফগানিস্তানে চীনা দূত হিসেবে কাজ করছিলেন, সেই ইয়াও চিং-কে এ বার পৃথিবীর সবচেয়ে বড় চীনা দূতাবাস সামলানোর দায়িত্ব দিয়ে ইসলামাবাদে পাঠানো হয়েছে। আর গত তিন বছর যিনি ইসলামাবাদে ছিলেন, সেই সান ওয়েইডং-কে দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে বেজিং। কিন্তু ইয়াও চিং-এর নতুন ইনিংসের শুরুটা মোটেই সুখকর হচ্ছে না। চিনা গোয়েন্দারা খবর পেয়েছেন, ইটিআইএম জঙ্গিরা চিং-কে খুনের চক্রান্ত করেছে। পাকিস্তানে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূতকে খুন করার দায়িত্ব যে জঙ্গি পেয়েছে, সে ইতিমধ্যেই পাকিস্তানে ঢুকেও পড়েছে বলে চিনের দাবি।

৫ হাজার ৭০০ কোটি ডলার বিনিয়োগে তৈরি চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের (সিপিইসি) নিরাপত্তা নিয়ে এমনিতেই চিন্তায় বেজিং। পাকিস্তানের হাত থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার দাবিতে লড়তে থাকা বালোচরা তো বটেই, আরও বেশ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের নিশানায় রয়েছে চীন-পাক অর্থনৈতিক করিডর। পাকিস্তানের সেনা এবং পুলিশ করিডরের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে অত্যন্ত তৎপর। কিন্তু পাক নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর সম্পূর্ণ ভরসা করে না বেজিং, তাই চীনা গোয়েন্দারাও সব সময় সক্রিয় থাকেন পাকিস্তানে।

গোয়েন্দা সূত্রেই সিপিইসি কর্তৃপক্ষ এ বার জানতে পেরেছেন, শুধু করিডরের উপর নয়, চীনা রাষ্ট্রদূতের উপর হামলার ছকও কষছে জঙ্গিরা। তাই সিপিইসি প্রকল্পের অন্যতম শীর্ষকর্তা পিং য়িং ফি ১৯ অক্টোবর চিঠি পাঠিয়েছেন পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকে। ইসলামাবাদে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা অবিলম্বে আরও বাড়াতে বলেছেন তিনি।

Pending বিদেশী মুঘল ও রোহিঙ্গাদের কাঁদিয়ে ছেড়েছিল এই বাঙালি হিন্দু রাজা


 ব্লগঃ- 'বারো ভুঁইয়া’ নামটা বাংলার প্রায় সমস্ত লোকজনই শুনে থাকবেন | তাঁদের কেন্দ্র করে বহু বীরগাথা, লোকগাথা লোকমুখে বহুকাল প্রচলিত ছিল| ঐতিহাসিকরা বলেন যে সংখ্যাটা ঠিক বারো ছিলনা সবসময় , 'বহুসংখ্যক’ বোঝাতে হয়তো ‘বারো’ শব্দটির অবতারণা। আবার অনেকের অনুমান যে অতি প্রাচীনকালে হয়তো বাংলায় বারো সংখ্যক শক্তিশালী সামন্তরাজা ছিলেন যার ফলে ‘বারোভুঁইয়া’ শব্দটি জনশ্রুতিতে পরিণত হয়। ‘বারো ভুঁইয়া’ দের কিছু বিবরণ অসমের ইতিহাসেও দ্রষ্টব্য,কামরূপের এক অধিপতি গৌড়রাজের ভুঁইয়া ছিলেন বলেও জানা যায় | মধ্যযুগের উত্তর ভারতের শাসকরাও অনেক সময় বাংলাকে ” বারোভুইয়ার মুল্ক” বলে উল্লেখ করতেন (এদের অনেক বিবরণ আবুল ফজলের আইন-ই-আকবরি ও মির্জা নাথানের বহরিস্তান-ই-ঘইবি  তে পাওয়া যায়)| এর কারণ হল যে বাংলার অধিপতি যেই হোক না কেন ,পরম্পরাগতভাবে মূল শাসক বা এই ভুঁইয়ারাই ছিলেন| এর কিছু উদাহরণ আরও প্রাচীনকালে পাল,সেন ও গুপ্তদের আমলেও দেখা যায়| রামপাল যখন বরেন্দ্র পুনরুদ্ধারের প্রস্তুতি করছিলেন তখন তাঁকে বিপুল সংখ্যক সামন্তকে ভূমিদানসহ বিভিন্ন উপঢৌকনের প্রলোভন দেখিয়ে নিজের পক্ষে টানতে হয়েছিল। সন্ধ্যাকর নন্দী রচিত “রামচরিতম্” কাব্যে এ বিষয়ের বিবরণ দ্রষ্টব্য | বলাবাহুল্য, মূল রাজার অনুপস্থিতিতে বা অরাজক অবস্থায় এরাই হয়ে উঠতেন রাজ্যের প্রধান হর্তা-কর্তা|

মধ্যযুগে পাঠানদের কেন্দ্রীয় শাসন যখন মোগল আক্রমণ ও অভ্যন্তরীণ সামন্তদের বিদ্রোহের ফলে শেষ হয়ে যায় তখন যেসব ভুঁইয়াদের উথ্থান হয় মূলত সেই ভুঁইয়াদের নামই বিখ্যাত হয়ে আছে | উদাহরণ স্বরূপ প্রতাপাদিত্য,মুকুন্দ রায়,কন্দর্পনারায়ণ,কেদার ও চাঁদ রায় প্রমুখ |পাঠ্যপুস্তকে যদিও বিশেষ স্থান এঁদের দেওয়া হয়নি ,তবে তাঁরা সে স্থান পাওয়ার যোগ্য কিনা তা আজ অবশ্যই বিচার্য বিষয়| এদের মধ্যে মুসলিম ও হিন্দু দুই ধর্মাবলম্বী ভুঁইয়ারাই ছিলেন |তারা কখনো দিল্লীতে কর দিতেন,কখনো বা দিতেন না এবং অনেকবার কেন্দ্রীয় শক্তিকে পরাস্ত করে নিজেদের স্বাধীন ঘোষণা করতেন | বলা হয় সম্রাট বাবরের সময় থেকেই বাংলায় মোগল আক্রমণ শুরু হলেও মোগল শাসনের সমগ্র বাংলা থেকে পরিপূর্ণ খাজনা আদায় একমাত্র শাহজাহানের সময় সম্ভব হয়েছিল | বাবরের আত্মজীবনীতে বাঙালিদের প্রতি তার রাগের উল্লেখ দেখা যায় – ” বাঙালিদের আমি দেখে নেব |”

এই সমস্ত ঐতিহাসিক ঘটনার (developments) পরিপ্রেক্ষিতে আজ আলোচনার বিষয় হলেন বারো ভুঁইয়াদের অন্যতম তথা ভ্রাতৃদ্বয় কেদার রায় ও চাঁদ রায়| কেউ কেউ কেদার রায়কে শ্রেষ্ঠ ভুঁইয়া বলেছেন এবং মহারাজ প্রতাপাদিত্যের থেকেও অধিক বীর ও চরিত্রবান বলেছেন| প্রতাপের মতো কুলীন না হওয়ার ফলে(তাঁরা ‘দে’ উপাধিধারী ছিলেন)এই কায়স্থদ্বয়ের বিবরণ ‘ঘটককারিকা’ তে পাওয়া যায় না| একই কারণে এমন আরও অনেক বীর হয়তো ইতিহাসে স্থান পাননি| এই ভ্রাতৃদ্বয়ের রাজধানী ছিল ঢাকার শ্রীপুর বা বিক্রমপুর( বর্তমানে মুন্সিগঞ্জ)|শাসন ও বীরত্বের জন্য তাদের প্রভূত খ্যাতি ছিল| বলা হয় সেন আমলের শেষের দিকে দক্ষিণ থেকে নিমু রায় বলে একজন রাজকর্মচারী এসেছিলেন,যাদব রায়ের দুই পুত্র কেদার ও চাঁদ তারই বংশোদ্ভূত |

বারো ভুঁইয়াদের অন্যতম ইসা খানের সাথে দুই ভাইয়ের সখ্য ছিল | মোগলবিরোধিতা তার একটা কারণ (ইসার পিতা ছিলেন হিন্দু রাজপুত কালীদাস গজদানি যে হুসেন শাহের আমলে গৌড়ে এসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে সুলেইমান খান নামে পরিচিত হন এবং শাহের ভ্রাতুষ্পুত্রী ফতেমাখানুমকে বিয়ে করেন | পরে বাহাদুর খাঁ তাকে মসনদ আলি উপাধি প্রদান করেন | বলা হয় যে শেরশাহপুত্র সেলিম খাঁর গৌড় আক্রমণের সময় সুলেইমান নিহত হন এবং দুভাই ইসা ও ইসমাইল তুরস্কে এক বণিকের কাছে বিক্রিত হয় | পরে তাদের মামা কুতুবুদ্দিন তাদের উদ্ধার করে এনে নিজ দুই কন্যার সাথে বিবাহ করান ) |

পরবর্তী কালে, কেদার ও চাঁদের সাথে ইসার বন্ধুত্ব শত্রুতায় পরিণত হয় | এর কারণরূপে ইসা খানের চাঁদের বিধবা কণ্যা স্বর্ণমনিকে ছলপূর্বক বিবাহ করাকে ধরা হয় | ইসা এনায়ৎ খানকে দূতরূপে পাঠিয়েছিলেন চাঁদ রায়ের কাছে পত্র প্রেরণ করতে , যাতে ইসা তার কণ্যার পাণিগ্রহনের প্রস্তাব রেখেছিলেন | এর ফলে ক্রুদ্ধ ভ্রাতৃদ্বয় ইসা খানের কলাগাছিয়া দূর্গ আক্রমণ করে বিধ্বস্ত করেন | সেখান থেকে ইসা পলায়ণ করে ত্রিবেণী দূর্গে চলে যান | বলা হয় যে এসময়ই কেদার ও চাঁদের কুলগুরু শ্রীমন্ত খাঁ(ভট্টাচার্য) স্বর্ণমণিকে ছলপূর্বক ইসার হাতে সমর্পন করেন | শ্রীমন্তের প্রতিহিংসাপরায়ণতার কারণ ছিল তার পরিবর্তে এক দেবল ব্রাহ্মণকে কেদার-চাঁদ ভ্রাতৃদ্বয়ের গুরু রূপে গ্রহণ করা |

তীব্র সংঘাত হেতু কেদার রায় ইসা খানের একের পর এক অঞ্চল বিধ্বস্ত ও করায়ত্ত করতে থাকেন | চাঁদ রায় শ্রীমন্তের বিশ্বাসঘাতকতা ও নিজ কন্যার ইসা কর্তৃক তার রাজধানী তথা সোনারগাঁ এর খিজিরপুরে (বর্তমানে হাজিগঞ্জ) বন্দী হওয়ার ঘটনা শুনে শোকাহত হন এবং কিছুকালের মধ্যেই হৃদরোগে তার দেহাবসান ঘটে | কেদার অগ্রজের মৃত্যুর ফলে শোকে কিছুকাল রাজকার্য থেকে বিরত থাকেন | মন্ত্রী রঘুনন্দন চৌধুরী এই অল্প সময় দক্ষতার সাথে রাজ্য চালান | ইসা খানকে তার জীবৎকাল পর্যন্ত বারবার কেদারের আক্রমণের সম্মুখীন হতে হয়েছিল | পরে ইসা খান মোগলদের সাথে যুদ্ধ করেও সন্ধি করে বসেন এবং ইসা অনুমানিক ১৫৯৯-১৬০০ খ্রিস্টাব্দে মারা যান |

সেই যুগে শুধু পাঠান-মোগল নয় , মগ ও ফিরিঙ্গিদের অত্যাচারেও বঙ্গবাসী অতীষ্ঠ ছিল | লবণের খনিরূপে বিখ্যাত সন্দ্বীপকে ঘিরে বাঙালি-মগ-পর্তুগীজ-মোগল দের মধ্যে বহু যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল | নাবিক পর্তুগীজদের সকলেই যে দস্যু ছিলেন তা নয় তবে অবশ্যই তাদের মধ্যে অনেক অত্যাচারী হার্মাদ ছিল | ফিরিঙ্গিদের পরাজিত করে কেদার রায় কৌশলে তাদের নিজ রাজত্বের অঙ্গীভূত করেন এবং কার্ভালিয়ান/কার্ভালিয়াস বা কার্ভালোকে করের বিনিময়ে সন্দ্বীপের রাজকার্য সামলে দেন | কার্ভালো কেদার রায়ের নৌবাহিনীর প্রধান হন | এই সময় মোগল সেনারা সন্দ্বীপ ঘিরে ফেললে কার্ভালোর সাহায্যার্থে কেদার সৈন্যপ্রেরণ করেন এবং যুদ্ধে পরাস্ত করে মোগলদের বিতাড়িত করেন |
অন্যদিকে আরাকানরাজ মেংরাজাগি বা সেলিমশার দৃষ্টি সর্বদাই সন্দ্বীপের উপর ছিল | তিনি ১৫০ রণতরী পাঠিয়ে সন্দ্বীপ হস্তগত করতে চাইলে কেদারের বাহিনীর সাথে তার যুদ্ধ হয় এবং মগরা পরাজিত হয়, সাথে ১৪০ টি তরী কেদার রায় হস্তগত করে ফেলেন | ক্রোধোন্মত্ত আরাকানসম্রাট পরের বার ১০০০ রণতরী ও বিপুল সৈন্য প্রেরণ করলে আরও ভীষণ যুদ্ধ হয় এবং এতেও মগরা পরাজিত হয়, ফলস্বরূপ প্রায় ২০০০ মগসৈন্য এতে নিহত হয় | অবিভক্ত বঙ্গের ইতিহাস অনুসারে, এমন ভীষণ নৌযুদ্ধ বাংলায় আর দেখা যায়নি | পরবর্তীতে কাভার্লো ক্ষতিগ্রস্ত তরীগুলো মেরামতের জন্য শ্রীপুরে যান | কেদার রায় ঐ সময় মোগলদের আক্রমণ প্রতিহত করতে ব্যতিব্যস্ত থাকায় আরাকানরাজ সন্দ্বীপ দখল করে ফেলে |

মানসিং দ্বিতীয়বার কেদারের সম্মুখীন হতে প্রস্তুত | তিনি মন্দা রায়ের নেতৃত্বে কেদারের বিরুদ্ধে অর্ধচন্দ্রযুক্ত পতাকাসহ মোগল নৌবাহিনী প্রেরণ করলে কালিন্দী নদীতে ভীষণ যুদ্ধ হয় | এদিকে রণধ্বনি ‘আল্লাহো আকবর’ , ওদিকে ‘জয় মা ছিন্নমস্তা” | যুদ্ধে মন্দা রায় কেদার কর্তৃক পরাজিত ও নিহত হয় | এই যুদ্ধে অধিকাংশ মোগলসেনা নিহত হয় এবং অবশিষ্ট সেনা পলায়ণ করে | তাদের শোণিতধারায় কালিন্দীর জল রক্তিম হয়ে উঠে | কার্ভালো ছাড়া কেদারের যে কজন সেনাপতি ও অন্যতম যোদ্ধাদের নাম পাওয়া যায় তারা হলেন রঘুনন্দন রায়, রামরাজা সর্দ্দার, পর্তুগিজ ফ্রান্সিস, কালীদাস ঢালী, শেখ কালু |

পরের বার মান সিং সেনাপতি কিলমক খানকে সৈন্যসমেত প্রেরণ করলে সেও পরাজিত ও বন্দী হয়| ইউরোপীয় ভ্রমণকারীরা তাদের বর্ণনায় কেদার ও মানসিং এর মধ্যে চারবার যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেছেন|
চতুর্থ বার মান সিং বিপুল সংখ্যক সৈন্য নিয়ে বিক্রমপুরের দিকে অগ্রসর হন| প্রায় নয় দিন ব্যাপী এই ভীষণ যুদ্ধ চলতে থাকে| পরিশেষে কেদার পরাজিত হন এবং বলা হয় যে তার কিছুকাল পরে আরও যুদ্ধ চললে বিদ্রোহ দমন করে কেদারের রাজ্য বিদ্রোহীদের তথা রঘুনন্দন,রামরাজা,শেখ কালু,ফ্রান্সিসদের মধ্যে বন্টন করে মান সিং প্রত্যাবর্তন করেন|

বঙ্গের এই বীরের tragedy সম্বন্ধে পরস্পরবিরোধী কিছু প্রবাদ ও তথ্য মেলেঃ-

প্রথমত, বলা হয় যে নবম দিন বীরবিক্রমে লড়াই করার সময় সহসা এক কামানের গোলার আঘাতে কেদার রায় মূর্ছিত হন এবং বন্দী হওয়ার কিছু কাল পরে তাঁর মৃত্যু হয়|

দ্বিতীয়ত, নবম( অথবা দশম) দিন যুদ্ধ শুরুর আগে প্রথামত কেদার রায় ইষ্টদেবী ছিন্নমস্তার পূজা করতে গেলে ধ্যানস্থ অবস্থায় তাঁকে গুপ্তঘাতক দ্বারা মুন্ডচ্ছেদ করেন মানসিং|

তৃতীয়ত, কেদার পরাজিত হওয়া সত্ত্বেও মানসিং কেদারের বীরত্বে মুগ্ধ হয়ে রাজ্যে তাঁর অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়ে প্রত্যাবর্তন করেন| মান সিংহর এহেন কিছু কর্মের উদাহরণ ইতিহাসে যে বিরল তা নয়|

তবে অনেকেই কেদার রায় সম্বন্ধে প্রাপ্ত তথ্যগুলির উপর ভিত্তি করে সেগুলির সম্ভাব্য উপসংহাররূপে প্রথম দুটিকে অধিক যুক্তিযুক্ত বলে মনে করেন|

মোগলদের বিরুদ্ধে বারো ভুঁইয়াদের একজোট করতে কেদার রায় বহু চেষ্টা করেন, কিয়ত্‍ সাফল্য লাভ করলেও তিনি এ কার্যে বিফল হন শেষ পর্যন্ত| তারা একজোট হলে হয়তো পরবর্তী ইতিহাস অন্যরকম হতো কিন্তু বারোভুঁইয়াদের মধ্যে রেষারেষি চরম স্তরের ছিল, এর সুবিধা মানসিং অবশ্যই পেয়েছিলেন| তবে কেদার রায়ের কৃতিত্ব দেশপ্রেমীদের কাছে অবশ্যই অক্ষয় অমর হয়ে থাকবে| বহু টোল, পাঠশালা, মন্দির, কারাগার ,কোষাগার, সেনা ছাউনী তিনি নির্মাণ করেছিলেন| তাঁর প্রজাবাৎসল্য বহুচর্চিত ও বন্দিত ছিল | যদিও তাঁর বহু কীর্তি পদ্মানদীর জলে ভেস্তে গিয়েছে |এর ফলে পদ্মা শ্রীপুর স্থানে ‘কীর্তিনাশা’ বলে পরিচিত|

পরিশেষে মানসিং ও কেদার রায়ের মধ্যে এক বিখ্যাত পত্রবিনিময়ের কথা না উল্লেখ করলেই নয়|মানসিং দূত দ্বারা কেদারের নিকট তরবারি ও শৃঙ্খল প্রেরণ করেন এবং মিশ্র ভাষায় এক পত্র লেখেন,
“ত্রিপুর মগ বাঙ্গালী, কাক কুলি চাকালি
সকল পুরুষমেতৎ ভাগি যাও পলায়ী
হয়-গজ-নর-নৌকা কম্পিতা বঙ্গভূমি
বিষম সমর সিংহো মানসিংহশ্চয়াতি|”

শেষ লাইনটার অর্থ হল সমরক্ষেত্রে যার সিংহের ন্যায় বিচরণ সেই মানসিংহ আসছেন |

প্রত্যুত্তরে কেদার লিখে পাঠান –
“ভিনতি নিত্যং করিরাজ কুম্ভং
বিভর্তি বেগং পবনাতিরেকং
করোতি বাসং গিরিরাজ শৃঙ্গে
তথাপি সিংহঃ পশুরেব নান্যঃ||”

অর্থাত বায়ুর অপেক্ষা (অধিক) বেগ সিংহের,নিয়ত হস্তীমুন্ড বিদারণ করে,পর্বতের উচ্চশৃঙ্গে অবস্থানও করে, তবুও সিংহ পরিশেষে একটি পশুই| তিনি আরও বলেন ” ভেবে দেখো এ শৃঙ্খল কার পায়ে সাজে তরবারি লইলাম লাগাইব কাজে||” বলাই বাহুল্য যে তাঁর চারিত্রিক তেজ ও বীরবিক্রম এই প্রত্যুত্তরের অক্ষরে অক্ষরে প্রকাশ পায় |

।।কৃতজ্ঞতা স্বীকার :- মাননীয় অনিমিত্র চক্রবর্তী।।

Sunday 22 October 2017

Pending বিদেশি মুঘল সম্রাটদের চরিত্রহীন বলছেন RSS নয় মুসলিম ধর্মীয় নেতা

ওয়েবডেস্কঃ- তাজ মহল নিয়ে বিতর্কের মাঝে কদিন আগেই মুখ খুললেন ভারতের উত্তরপ্রদেশের শিয়া ওয়াকফ বোর্ড। ওই মুসলিম সংগঠনের চেয়ারম্যান ওয়াসিম রিজভি বলেন, 'তাজমহল ভালোবাসার প্রতীক হয়েতো হতে পারে, তবে প্রার্থনা করার জায়গা নয় একেবারেই নয়।'

  কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মুঘলরা(যারা সবাই বিদেশ থেকে আগত) সবাই চরিত্রহীন ছিলেন। প্রত্যেকেই বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। অন্যদিকে, এদিনই রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, 'তাজমহল একটি দর্শনীয় স্থান। কে বানিয়েছে সেটা বড় কথা নয়।'

Saturday 21 October 2017

Pending ভারতের কিছু কুখ্যাত ভূতুড়ে জায়েগার একটি মুম্বাইয়ের তাজ হোটেল

ওয়েবডেস্কঃ- ভুত আদৌ আছে না কি এসবই মনের ভুল, এই বিষয় নিয়ে তর্কের শেষ নেই। অনেকেই অনেক ভাবে বিষয়টাকে কাকতালীয় প্রমানের চেষ্টা করেন। অনেকে আবার এই ভূতুড়ে ঘটনাকে সত্যি মনে করেন। অনেকেই আবার বলেন ভগবান নেই কিন্তু ভূত রয়েছে। অনেকে আবার ফিজিক্স দিয়ে বিষয়টা ব্যাখ্যা করেন। কিন্তু যে যাই করুক ভূতুড়ে ব্যাপার নিয়ে সারা পৃথিবীর মানুসের মধ্যেই এক বিরাট কৌতূহল রয়েছে। অন্যান্য দেশের মতই ভারতেও বিশ্ব বিখ্যাত বেশকিছু ভূতুড়ে জায়েগা রয়েছে। বেশ কুখ্যাত এমনই ১৬-টা জায়েগার ব্যাপারে বিশেষ কিছু তথ্য দেওয়া হল।

 ১. ভানগর দুর্গ – পৃথিবীর অন্যতম একটি ভুতুরে স্থান। ভানগর দুর্গ শুধুমাত্র ভারতের সবচেয়ে ভৌতিক জায়গাই নয় সারা বিশ্বের মধ্যেও এটি ভৌতিক স্থানগুলোর শীর্ষে রয়েছে। এই দুর্গ রাজস্থানে অবস্থিত, ভারত সরকারের পক্ষ্ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দুর্গকে ভৌতিক বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই দুর্গে প্রবেশের জন্য কতৃপক্ষের আদেশ ও নিয়ম খুব কঠোর এবং যারা এখানে সময় কাটিয়ে গেছেন, তারা তাদের গল্পে অস্বাবিক ক্রিয়াকলাপের কথা বর্ণনা করেছেন।

২. বৃজরাজ ভবন প্রাসাদ- কোটা, রাজস্থান যেখানে শ্রী বার্টন ও তার পুত্রকে খুন করা হয়েছিল। রাজস্থানের কোটার বৃজরাজ ভবন হলো একটি বিশাল রাজকীয় স্থান। এখানে প্রবেশ নিষিদ্ধ, এখানকার রক্ষীরাও ভূতুরে ক্রিয়াকলাপ সম্পর্কে অভিযোগ জানিয়েছেন। ব্রিটিশ আমলে জনৈক বার্টন এবং তার ছেলেকে এখানে খুন করা হয়। এখানকার অধিবাসী ও রক্ষিবাহিনীদের থেকে এই স্থানের বিভিন্ন ভৌতিক অভিজ্ঞতার কথা গণমাধ্যমের সুত্রে জানা গিয়েছে।

৩. ডুমাস বীচ – গুজরাটের সবচেয়ে সুন্দর বীচ, এখানে একজন মানুষ রাত কাটানোর জন্য গেছিলেন, কিন্তু আর ফেরেননি। গুজরাটের ডুমাস সৈকত হলো অন্যতম সুদৃশ সৈকত কিন্তু জায়গাটি মোটেই উপভোগ্য নয় কারণ ভারতীয় সরকার স্থানটিকে ভূতুরে স্থান হিসেবে ঘোষণা করেছেন। সুরাটের স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে কোনো ব্যক্তি যদি এই সমুদ্র সৈকত পরিদর্শনে এসে এক রাত কাটান, তাহলে তারা আর কখনই ফিরে আসেন না। এই জায়গায় আগে একটি হিন্দু শ্মশান ছিল।

৪. কুদহারা – রাজস্থানের ভৌতিক গ্রাম। রাজস্থানের দ্বিতীয় ভয়ংকর জায়গাটি হলো কুদহারা, ১৯৯০ সাল থেকে এই গ্রাম ভৌতিক গ্রাম হিসাবে পরিচিত। একটি উপকথা অনুসারে, আট শতাব্দীর অধিক ধরে সেখানে থাকা গ্রামবাসীরা হঠাত এক রাত্রিতে বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং আর ফিরে আসেনি। কোনো ব্যক্তি এই গ্রামে জমি ও সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করলে গ্রামে উপস্থিত আত্মা তাকে মেরে ফেলে।

৫. ডি’সুজা বস্তি – মহারাষ্ট্রের সর্বাধিক ভৌতিক স্থান। মুম্বাইবাসীরা মহিমের ডি’সুজা বস্তির সঙ্গে খুব ভালোভাবে পরিচিত কারণ এটি মহারাষ্ট্রের পোড়ো জাগাগুলির মধ্যে সবথেকে ভয়ানক জায়গা। স্থানীয় লোকদের মতে এই জায়গায় একটি মহিলার আত্মা আছে, যিনি কুয়ো থেকে জল তুলতে গিয়ে মারা যান। তিনি কারো ক্ষতি করেন না কিন্তু মানুষদের এই গ্রামের কাছে ঘেসতে দেন না।

৬. বৃন্দাবন সোসাইটি – থানের সর্বাধিক ভৌতিক স্থান, যেখানে এক অদৃশ্য আত্মা রক্ষীদের থাপ্পর মারেন। বৃন্দাবন সোসাইটিকে থানের সবচেয়ে ভোতিক স্থান বলে গন্য হয়, যেখানে একজন মানুষ অনেক বছর আগে তার জীবন হারিয়েছেন। রক্ষীরা তাদের বয়ানে জানিয়েছেন যে রাতে তারা প্রহরারত অবস্থায় কেউ চোখের পাতা বুঝলে সেই সময় কেউ একজন এসে নাকি তাদের সজোড়ে থাপ্পর মারে !

৭. তাজমহল প্রাসাদ হোটেল – সম্পূর্ণ বারান্দা জুড়ে ভুতুরে আনাগোনার কথা শোনা যায়। হ্যাঁ এটা সত্য! বলা হয়ে থাকে যে, তাজমহল প্রাসাদের স্থপতি কাঠামো অনুসারে হোটেল তৈরি না করার জন্য হোটেলের ভিতরে খুন হন। অনেকে হোটেলের বারান্দার প্রবেশ দ্বারে তাঁর ভূত দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। সেখানে না যাওয়া অবধি আপনার পক্ষে এর সত্য উত্ঘাতন করা সম্ভব নয়।

৮. আসামের জাতিঙ্গা – অসমাধিত পাখিদের আত্মহত্যার জন্য এই স্থান বিখ্যাত। আসামের জাতিঙ্গা পাখিদের জন্য একটি সুন্দর জায়গা। অসমাধিত পাখি আত্মহত্যার কারণে জায়গাটি বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত। ঘটনা খারাপের দিকে যায় যখন লক্ষ্য করা হয় পাখিরা সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ৬.৩০ থেকে ৯ টার মধ্যে মারা যায়। এই ঘটনাটি বুঝতে বিভিন্ন গবেষণা হয়েছে, কিন্তু কিছুই সুরাহা পাওয়া যায়নি।

৯. রাজ কিরণ হোটেল – মুম্বাইয়ের অতিপ্রাকৃত ঘটনার জন্য প্রখ্যাত এক স্থান। হোটেলটিতে অতিপ্রাকৃত ক্রিয়াকর্মের কারণে আপনাকে আপনার নিজের ঝুঁকিতে রাজ কিরণ হোটেল দেখার অনুমতি নিতে হবে। হোটেলের অধিবাসীগণ প্রচন্ড কম্পনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন এবং বিছানার চাদর নিজে থেকেই দূরে সরে যায় বলেও জানিয়েছেন। পোড়ো রুমটি অভ্যর্থনার পিছন দিকে একটি নিরিবিলি কোণে অবস্থিত।

১০. জি.পি. ব্লক – মিরাটে অবস্থিত একটি স্থান যেখানে চার জন পুরুষকে সুরাপান করে আমোদ করতে দেখা যায়। মীরাটের জি.পি. ব্লকে যারা থেকেছেন তারা বলেন যে তারা নাকি চারটে ছেলেকে সুরা সেবন করতে ও আড্ডা মারতে দেখেছেন! যাইহোক, কিছু সময় পর পরিস্থিতিটি আরও ভুতুড়ে হয়ে যায় এবং তাদের কাউকেই দেখা যায় না। তাই জায়গাটি অতিপ্রাকৃত কার্যক্রম পর্যবেক্ষকদের কাছে দর্শনীয় হয়ে উঠেছে।

১১. আলেয়া প্রেতাত্মা দীপ্তি – পশ্চিমবঙ্গের একটি স্থান, যেইসব মত্সজীবিরা এই দীপ্তিকে অনুসরণ করেছেন তারা আর ফিরে আসেন নি পশ্চিমবঙ্গের প্রেতাত্মা আলেয়া, মার্শাল প্রেতাত্মা নামেও পরিচিত। মার্শাল লাইট দ্বারা অনেক জেলে বিভ্রান্ত হয়েছেন এবং এটা বিশ্বাস করা হয় যে, কেউ যদি সেই আলো কে অনুসরণ করে, তারই বিপদ ঘনিয়ে আসে। যেসব জেলেরা অন্ধভাবে মার্শাল লাইটের পথ অনুসরণ করেছেন তারা কখনো ফিরে আসেন নি।

১২. দার্জিলিং এর ডাউন হিল – বিচিত্র অপ্রাকৃতিক ক্রিয়াকলাপ এবং মস্তকহীন বালকের ভ্রমনের জন্য পরিচিত। দার্জিলিঙ্গের কুর্সেং-এ অবস্থিত ডাউন হিল, বেড়াবার জন্য এটি একটি সুন্দর জায়গা, কিন্তু এটিকে দেশের সবচেয়ে ভৌতিক স্থান গুলোর মধ্যে একটি বলে গণ্য হয়। ডাউন হিল-এর কাছে মেয়েদের একটি বিদ্যালয় অতিপ্রাকৃত ও অস্বাভাবিক কাজকর্মের প্রত্যক্ষ্ সাক্ষী এবং অনকেই পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে মুন্ডহীন একটি ছেলেকে চলাফেরা করতে দেখেছে। এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলা যায় যে ডাউন হিল-এর বনে অসংখ্য খুন সংঘটিত হয়েছে।

১৩. সঞ্জয় ভ্যান – নিউ দিল্লির এক ভৌতিক স্থান। সঞ্জয় ভ্যান নিউ দিল্লির একটি বিশাল বনভূমি। মানুষ এখানে একটি লাল শাড়ি পরিহত মহিলা কে দেখেছন যিনি হঠাতই দৃশ্যমান হন এবং সেখানকার মানুষজন আতঙ্কিত হওয়া মাত্রই আবার অদৃশ্য হয়ে যান।

১৪. রামোজি ফিল্ম সিটি – যেখানকার আলো নিজে থেকেই জ্বলে আবার নিজে থেকেই নিভে যায়। এটাও একটা ভুতুরে জায়গা? রামোজি ফিল্ম সিটি অনেক অস্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপের সাক্ষী। বলা হয়ে থাকে যে, এখানকার আলো নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যায় এবং একবার অন্ধকার হলে নিজে থেকেই ফিরে আসে। বাতি হাতে পাহারাদারেরা আহত হয় এবং অবশিষ্ট খাওয়ার নিজের মতো বিক্ষিপ্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

১৫. আগ্রাসেন কি বাওলি – দিল্লির জন্তর-মন্তরের নিকট একটি ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ। এটা দিল্লির একটা ঐতিহাসিক নিদর্শন এবং যন্তর মন্তর থেকে হাটা পথের দুরত্বে। কিন্তু জনশ্রুতি অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি পাঁচ মিনিটের বেশি এটাকে দেখলে আত্মহত্যা করেন এবং এর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখা পাওয়া যায়নি।

১৬. সানিওয়ারওয়াদা দুর্গ – পুনের প্রখ্যাত একটি ভৌতিক স্থান। এটি পুনের একটি বিখ্যাত দুর্গ এবং মহারাষ্ট্রের প্রাচীনতম দুর্গগুলির মধ্যে একটি। অন্ধকার হয়ে যাওয়ার পর এই দুর্গে যাওয়া ঠিক নয়, কারণ বলা হয় যে, দুর্গটিতে কোন যুবরাজের আত্মা তাড়িয়ে বেড়ায় যাঁকে তাঁর নিজের খুড়তোত ভাইবোন ও পরিবারের সদস্যরাই খুন করেছিলেন। ভৌতিক কার্যকলাপ প্রত্যেক পূর্ণিমার রাতে আরো বেশি করে দেখা যায়।

বিপ্লবের নামে ৪ বছরে ২০ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছিল এই কমিউনিস্ট শাসক


ব্লগঃ- বামেদের মুখে বিপ্লবের কথা থাকবে না এটা ভাবাই যায়ে না। তারা যা কিছু করে সবই বিপ্লবের জন্য। পক্ষান্তরে বলা যায়ে তারা যা কিছুই করে সবই বিপ্লবের নামে চাপিয়ে দেয় বা দিতে চায়ে। এমন কি ওদের কাছে সন্দেহের বশবর্তী হয়ে মানব হত্যা করাটাকেও অনেক সময়ই বিপ্লব বলে চালানো হয়ে। অনেকটা যেমন আমাদের মাও-বাদিরা করছে। এই বিপ্লবের নামে স্তালিন-মাও-চে থেকে শুরু করে এখনের কিম জং সবাই মানুষ মেরেছে। কিন্তু এদের সকলকেই ছাপিয়ে গেছেন একটি ছোট্ট এশিয় দেশের বামপন্থী ডিক্টেটর। তিনি এক অখ্যাত বাম নেতা পল পট। হ্যাঁ তিনি কখনোই স্তালিন-মাও-চে দের মত মানুষ মেরেও সুখ্যাতি পান নি। কারণ হয়েতো তিনি এসব লুকিয়ে নয়ে বুক চিতিয়ে প্রকাশ্যে করেছিলেন। ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৯-র এই স্বল্প সময় রাজত্ব্য করেই চার ভাগের এক ভাগ জনগণকে বিপ্লবের নামে হত্যা করেছিলেন। মানুষ মারার রেকর্ডে তিনি স্তালিন-মাও-চে সকলকেই হারিয়ে দিয়েছেন।

কম্বোডিয়া ছিল ফরাসী কলোনি। ১৯৫৪ সালে স্বাধীনতা লাভের পরে সেখানে ক্ষমতায় ছিলেন রাজা নরোদম সিহানুক। দমননীতির মাধ্যমে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা এবং ১৯৫৫তে বিতর্কিত নির্বাচনের দ্বারা তিনি বিরোধী বামদের মনে এই ধারনা গেথে দিতে সমর্থ হন যে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় আসলে ক্ষমতার পরিবর্তন সম্ভব নয়। তা সত্ত্বেও দুর্বল হবার কারনে কম্বোডিয়ার সমাজবাদী দলগুলো তখন রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে কোন তীব্র আন্দোলন কিংবা বিপ্লব গড়ে তুলতে পারে নি। 

সে সময়টাতে আরো অনেকের মত "স্যালথ সার" নামে এক কম্বোডিয়ান যুবকও স্বপ্ন দেখত শোষিতের মুক্তির। একটি শ্রেনীহীন সমাজের, বৈষম্যহীন রাষ্ট্রের। ফ্রান্সে উচ্চ শিক্ষারত সময়েই তার মনে দাগ কাটে এই সমাজবাদী ধ্যান ধারনা। ১৯৫৪ সালে ফ্রান্স থেকে ফিরে স্যালোথ তখন স্বীকৃত কমিউনিস্ট পার্টি এবং আন্ডারগ্রাউন্ড কমিউনিস্ট পার্টিদের নিয়ে কাজ করা শুরু করেন।

সরকারের দমননীতি বাড়তে বাড়তে এমন পর্যায়ে চলে যায় যে, ১৯৬২ সাল থেকে কমিউনিস্ট দলগুলো আর নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করতে পারে নি। ১৯৬৩তে স্যালোথকে চলে যেতে হয় আত্মগোপনে, কারন তার উপরে নেমে এসেছে সরকারের খড়গহস্ত। ১৯৬৩তেই তিনি পার্টি সেক্রেটারী নির্বাচিত হন। সরকারের স্বৈরাচার এবং অপশাসনের ফলে দ্রুত বাড়তে থাকে খেমাররুজদের তৎপরতা। একসময় খেমাররুজরা দখল করতে শুরু করে কম্বোডিয়ার বিভিন্ন অংশ। খেমাররুজ নেতা স্যালথ সার ওরফে পল পট পরিচিত হন "ব্রাদার নাম্বার ওয়ান" নামে।

১৯৭০ সালে আমেরিকার সাহায্য নিয়ে জেনারেল লন নল উৎখাত করেন প্রিন্স সিহানুককে। যার ফলে সিহানুক এবং খেমাররুজদের মধ্য এক জাতীয় সমঝোতা তৈরী হয়। লন নলের দমননীতি এবং তৎকালীন অস্থিতিশীলতার ফলে বাড়তে থাকে খেমাররুজ গেরিলাদের তৎপরতা। শেষ পর্যন্ত ১৯৭৫ সালে খেমাররুজ গেরিলারা দখল করে নেয় নমপেন এবং কম্বোডিয়া। 

১৯৭২ সালে ক্ষমতা দখলের আগেই খেমাররুসজ গেরিলারা মাজ পরিবর্তনের দিকে জোর দেয়। খেমাররুজ নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে তারা পোশাক এবং অন্যান্য বিষয়ে নিজেদের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়। পল পট ভূমি সংস্কার বিষয়ে মনোযোগী হন। যার ভিত্তি ছিল সম আয়তনের ভূমির মালিকানা। এসময় তারা সমস্ত প্রাইভেট যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। ১৯৭২ এ তাদের নীতি ছিল স্বাধীন এলাকাগুলোর দিকে মানুষ কমিয়ে দেয়া। এসব নীতি দরিদ্র কৃষকের জন্য সুবিধাজনক হলেও তা শহুরে রিফিউজিদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাড়ায়। ১৯৭৩ সালে পল পট ডিক্রি জারী করেন যাতে কৃষিভিত্তিক গ্রামগুলোতে সমিতি মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ব্যক্তি মালিকানা নিষিদ্ধ হয়। 

পল পট মাওবাদী নীতি গ্রহন করেন যেখানে কৃষকরাই হচ্ছে সত্যিকার মেহনতী শ্রেনী। শহর থেকে আসা মানুষগুলোর অধিকার কমে যায়, কমে যায় তাদের রেশন। মার্চের ২০, ১৯৭৬ এর নির্বাচনে এরা ভোট দিতে পারেনি, যদিও কম্বোডিয়ার সংবিধান সবার অধিকার নিশ্চিত করেছিল। খেমাররুজ নিয়ন্ত্রিত রেডিও দাবী করত তাদের কৃষিভিত্তিক সমাজের স্বপ্নপূরনের জন্য এক থেকে দুই মিলিয়ন মানুষই যথেষ্ট। বাকীদের জন্য তাদের মেসেজ ছিল, "তোমাদের রেখে কোন লাভ নেই, তোমাদের বিনাশে কোন ক্ষতি নেই।" 

১৯৭৫ সালে ক্ষমতা দখলের পর থেকেই একের পর এক পরিবর্তনের দিকে জোড় দিতে থাকে পল পট। তিনি মনে করতেন অতীতের কাম্পুচিয়া সাম্রাজ্যের গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য দরকার সেই সময়ের মত জীবন ধারা। সব থেকে আগে তিনি কম্বোডিয়ার প্রায়ে সকল আধুনিক কল-কারখানা বন্ধ করিয়ে দেন। কৃষক ছাড়া বাকি সকল শ্রেণীর মানুষদের তাঁর প্রশাসন বুর্জোয়া শ্রেণীভুক্ত বলে ঘোষণা করে দেন। এর পর থেকেই শুরু হয় বিপ্লবের নামে গণ-নিধন। এই হত্যা কাণ্ডে আট থেকে আশি কেউই রক্ষা পায়েনি। শিক্ষক, ব্যবসায়ী, প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত ব্যাক্তি এমনকি কৃষকরাও রক্ষা পায়েনি। যখন তখন যে কোন মানুষকে বাম্পন্থার জন্য বিপদ জনক বলে হত্যা করা হত। ১৯৭৬ সালে ভিয়েতনাম এই কমিউনিস্ট ডিক্টেটর কে ক্ষমতা চ্যুত করার পর বিভিন্ন সরকারি নথি ঘেটে দেখা গেছে পল পটের ৪ বছরের শাসনকালে প্রায়ে ২০ লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। যদিও একেবারে ১০০% সঠিক ভাবে এই সংখ্যা বলা অসম্ভব কারণ অনেক নথিকেই তারা নষ্ট করে দিয়েছিল। তবে এই সংখ্যাটা হলেও তা ঐ দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায়ে ৪ ভাগের ১ ভাগ।

কম্বোডিয়ার একটি গণ কবর থেকে পাওয়া কঙ্কাল
 পল পট বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে রাশিয়ার পরিবর্তে বেছে নেন চীনকে। ভিয়েতনাম ছিল রাশিয়ার বলয়ভূক্ত। ১৯৭৬ সালের ডিসেম্বরে পট পট ভিয়েতনামকে শত্রু রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষনা করে। ভিয়েতনামের সাথে বেশ কয়েকটি সংঘর্ষের পরে ভিয়েতনামের কাছে খেমাররুজ গেরিলারা ক্ষমতা হারায় ১৯৭৯ সালে এবং খেমাররুজ গেরিলারা এবং পল পট চলে যান আত্মগোপনে। ১৯৮৫ সালে তাদের এলাকাগুলোতে ভিয়েতনামের আক্রমন তীব্রতর হওয়ায় পল পট থাইল্যান্ডে পালাতে বাধ্য হন। ভিয়েতনাম ১৯৮৯ সালে কম্বোডিয়া থেকে যাবার পরে নতূন কম্বোডিয়ান সরকার খেমাররুজ গেরিলাদের সাথে শান্তি চুক্তি করতে আগ্রহী হলেও পল পট তাতে রাজী হন নি। অন্যদিকে সন্দেহ করতে থাকেন তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু সোন সেনকে সরকারের পক্ষে কাজ করার জন্যে। তীব্র হয়ে যায় খেমাররুজদের অন্তর্কলহ। এরই এক পর্যায়ে সোন সেনকে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেন পল পট। কিন্তু এর পরে আরেক খেমাররুজ নেতা টা মক পল পটকে গ্রেফতার করে নির্বাসন দেন। পল পট সম্পূর্নরূপে হারান খেমাররুজদের সমর্থন। ১৯৯৮ সালে এই হাউস এরেস্ট অবস্থাতেই তার মৃত্যু ঘটে। 

খেমাররুজ কর্তৃক কম্বোডিয়ানদের এই রক্ত তাদের আদর্শের রক্ত। পল পট এবং খেমাররুজ গেরিলারা কম্বোডিয়াতে "ইয়ার জিরো" নামে একটি নূতন আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন, যেখানে সভ্যতা আবার নূতন করে শুরু হবে। আগের সমাজের সমস্ত মূল্যবোধ এবং ট্রাডিশনকে ধ্বংস করে নূতন একটি সংস্কৃতি দিয়ে শুরু হবে কম্বোডিয়া। যার ফলে তাদের মূল টার্গেট হয়ে যায় বুদ্ধিজীবী এবং শিক্ষকরা। গ্রাম ও কৃষিভিত্তিক একটি সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষে খেমাররুজ বাহিনী শহর থেকে বহিষ্কার করে এর অধিবাসীদের, বন্ধ করে দেয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।  ১৯৮৮ সালে থাইল্যান্ডে পল পট তার সময়কালের হত্যাকান্ডকে ভিয়েতনামী এজেন্টদের কাজ বলে দাবী করেন। তবে তিনি পরাজিত লন নল ও তাদের নেতাদের হত্যাকান্ডের দায় নেন।

এত কিছুর পরেও তিনি বলেছিলেন,
"মানুষ হত্যা কিংবা জাতিকে হত্যা করার জন্যে আমি বিপ্লবে যোগ দেই নি। আমার দিকে তাকাও। আমাকে কি হিংস্র দেখায়?"

Friday 20 October 2017

আজকের দিনেই যেভাবে তৈরি হয়েছিল স্বাধীন ভারত(আজাদ হিন্দ) সরকার

ওয়েবডেস্কঃ- আজাদ হিন্দ ফৌজ বা ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (আইএনএ) ভারতীয় জাতীয়তাবাদীদের দ্বারা গঠিত একটি সশস্ত্র সেনাবাহিনী। ১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এই বাহিনী গঠিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ বিরোধী অক্ষশক্তিকে সমর্থনকারী সুভাষচন্দ্র বসু, রাসবিহারী বসুর মতো কয়েকজন সংগ্রামী নেতার চেষ্টায় গড়ে ওঠা ভারতীয় স্বাধীনতাকামী সামরিক বাহিনী। এটাই ছিল আধুনিক ভারতের তৈরি হওয়া প্রথম স্বাধীন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি(আইএনএ)। এরপর ১৯৪৩ সালে সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে পুনর্গঠিত হয়ে এই বাহিনী সুভাষচন্দ্রের আর্জি হুকুমত-এ-আজাদ হিন্দ (স্বাধীন ভারতের অস্থায়ী সরকার)-এর সেনাবাহিনী ঘোষিত হয়।

১৯৪১ সালের ১৭ জানুয়ারি সুভাষ বসু গোপনে কলকাতা ত্যাগ করে জার্মানিতে গমন করেন।  যদিও তিনি রাশিয়া যেতে চেয়ে কলকাতা ত্যাগ করেছিলেন, কিন্তু কমিউনিস্ট রাশিয়াতে তাকে ঢুকতেই দেওয়া হয়ে নি। পড়ে কাবুলের ইতালিয়ান কনস্যুলেটের সহায়তায়ে বার্লিন পৌছান। বার্লিনে তিনি জার্মানির সমর্থনে ভারতের অস্থায়ী স্বাধীন সরকার গঠন করেন এবং বার্লিন বেতার সম্প্রচারের মাধ্যমে তাঁর ধ্যানধারণা প্রচার করতে থাকেন। স্বয়ং হিটলারের উপদেশে জার্মানি থেকে তিনি জাপানের সঙ্গেও যোগাযোগ স্থাপন করেন। এ সময়ই জার্মানির ভারতীয় সম্প্রদায় সুভাষকে ‘নেতাজী’ উপাধি দেয়। এখানেই ‘জয় হিন্দ’ স্লোগানের জন্ম। 

ইতোমধ্যে ১৯৪১ সালের ডিসেম্বরে মালয়ে জাপানিদের কাছে ইংরেজরা পরাজিত হলে ১৪নং পাঞ্জাব রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন মোহন সিং একজন ভারতীয় ও একজন ইংরেজ সেনানায়কসহ জাপানিদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রথম পর্যায়ে জাপানিদের অস্বাভাবিক সাফল্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অবস্থানরত ভারতীয়দের স্বাধীনতার ব্যাপারে উত্তেজিত করে তোলে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারত স্বাধীনতাকামী ছোট ছোট সংঘ গড়ে ওঠে। এরকমই একটি সংঘের নেতা ছিলেন প্রীতম সিং। প্রীতম সিং ও জাপানি সেনানায়ক মেজর ফুজিহারা বন্দি ভারতীয় সৈন্যদের নিয়ে একটি ভারতীয় বাহিনী গঠনের জন্য মোহন সিংকে অনুরোধ করেন, প্রথমে ইতস্তত করলেও পরে তিনি এতে রাজি হন। ব্রিটিশ সেনানায়ক ৪০,০০০ ভারতীয় সৈন্যকে জাপান সরকারের প্রতিনিধি মেজর ফুজিহারার হাতে তুলে দিলে তিনি তৎক্ষণাৎ মোহন সিং-এর কাছে তাদের সমর্পণ করেন। বলা যেতে পারে এটাই ছিল আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠনের প্রথম পদক্ষেপ। 

পরবর্তীকালে জাপানিরা মালয় উপদ্বীপ অতিক্রম করে ১৯৪২ সালের ১৫ ফের্রুয়ারি সিঙ্গাপুর দখল করে। তারা আরও উত্তরে অগ্রসর হয়ে বার্মা (বর্তমান মায়ানমার) আক্রমণ করে এবং ১৯৪২ সালের ৭ মার্চ রেঙ্গুন (বর্তমান ইয়াঙ্গুন) অধিকার করে। খ্যাতনামা বিপ্লবী রাসবিহারী বসু এ সময়ে জাপানে অবস্থান করছিলেন। ১৯৪২ সালের ২৮ মার্চ রাসবিহারী টোকিওস্থ ভারতীয় নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গকে এক সভায় আহবান করেন। সভায় স্থির হয়, জাপানের অধিকৃত সমুদয় স্থানের ভারতীয় অধিবাসীদের নিয়ে ভারতীয় স্বাধীনতা সংঘ স্থাপন এবং ভারতীয় সেনানায়কদের অধীনে ভারতের একটি জাতীয় সেনাবাহিনী গঠন করা হবে। এ উদ্দেশ্যে ১৯৪২ সালের ১৫ জুন ব্যাংককে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২৪ জুন ১৯৪২ পর্যন্ত অধিবেশন চলে এবং ৩৫টি প্রস্তাব গৃহীত হয়। একটি প্রস্তাবে সুভাষচন্দ্র বসুকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়। 

ব্যাংকক সম্মেলনের আগেই ১৯৪২ সালের এপ্রিলে মোহন সিং ভারতীয় সেনানায়কদের নিয়ে একটি সভা করেন এবং একটি বিধিবদ্ধ বাহিনী সংগঠিত করেন। ব্যাংকক সম্মেলনে এ সংগঠিত বাহিনী গঠনের বিষয়টি গৃহীত হয় এবং মোহন সিং-এর সেনাপতি নির্বাচিত হন। সম্মেলনে স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য একটি ৫ সদস্যবিশিষ্ট কার্যকর সমিতি গঠিত হয় এবং রাসবিহারী বসু হন এর সভাপতি। ১৯৪২ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রকাশ্যে আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করা হয়। 

১৯৪৩ সালের ১৩ জুন সুভাষচন্দ্র বসু টোকিও পৌঁছুলে জাপানের প্রধানমন্ত্রী তোজো তাঁকে সাদর অভ্যর্থনা জানান এবং জাপানি পার্লামেন্টে ভারতের স্বাধীনতার ব্যাপারে জাপানের সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন। ১৯৪৩ সালের ২ জুলাই সুভাষ সিঙ্গাপুরে আগমন করলে বিরাট জনতা তাঁকে সংবর্ধনা জানায়। ৪ জুলাই রাসবিহারী বসু পদত্যাগ করেন এবং সুভাষ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভারতীয় স্বাধীনতা সংঘের সভাপতি হন। ‘নেতাজী’ নামে অভিহিত সুভাষ অস্থায়ী স্বাধীন ভারত সরকার গঠনের প্রস্তাব ঘোষণা করেন। পরদিন নেতাজী আজাদ হিন্দ ফৌজ পরিদর্শন করে ‘দিল্লি চলো’ আহবানে নতুন উন্মাদনার সৃষ্টি করেন। ২৫ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে সেনাপতি পদ গ্রহণ করে সুভাষ বসু আজাদ হিন্দ ফৌজের উন্নতি ও শৃঙ্খলা বিধানে আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৪৩ সালের ২১ অক্টোবর নেতাজী পূর্ব এশিয়ার সমবেত প্রতিনিধিদের সমক্ষে অস্থায়ী স্বাধীন ভারত সরকার প্রতিষ্ঠা এবং ২৩ অক্টোবর ব্রিটেন ও আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এই সময় ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি সরাসরি ব্রিটিশদের পক্ষ নিয়ে নেতাজি এবং আজাদ হিন্দ সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার চালাতে থাকে। এমনকি সেই সময়ের ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্রে নেতাজিকে তোজোর কুকুর বলেও উল্লেখ করা হয়েছিল।

আজাদ হিন্দ ফৌজকে এমনভাবে গঠন করা হচ্ছিল যে, তারাও জাপানি সৈন্যের সঙ্গে ভারত অভিযানে আসবে। কিন্তু জাপানি সেনাপতি টেরাউচি তিনটি কারণে এতে আপত্তি জানান। তিনি মনে করেন পরাজয়ের কারণে ভারতীয়রা ভগ্নোৎসাহ, জাপানিদের মতো কষ্টসহিষ্ণু নয় এবং মূলত তারা ভাড়াটে সৈনিক। তাই তিনি বলেন যে, জাপানিরাই ভারত অভিযানে যাবে এবং ভারতীয় বাহিনী সিঙ্গাপুরে থাকবে। সুভাষ এ প্রস্তাব মেনে নিতে পারেন নি। অনেক আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয় যে, মাত্র এক রেজিমেন্ট ভারতীয় সৈন্য জাপানি সৈন্যদলের সঙ্গে ভাগ হয়ে যুদ্ধ করবে, যদি দেখা যায় তারা যুদ্ধক্ষেত্রে জাপানিদের সমকক্ষ তাহলে আরও ভারতীয় সৈন্য গ্রহণ করা হবে। যুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য পূর্বের গান্ধী, আজাদ ও নেহরু ব্রিগেডে বিভক্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ থেকে বাছাই করে ‘সুভাষ ব্রিগেড’ নামে নতুন একটি ব্রিগেড গঠিত হয়। 

১৯৪৪ সালের জানুয়ারির প্রথম দিকে সুভাষ ব্রিগেড রেঙ্গুনে পৌঁছে। ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত হয় যে, ভারতীয় বাহিনী এক ব্যাটেলিয়ন অপেক্ষা ছোট হবে না, দলনায়ক হবেন একজন ভারতীয়, জাপান-ভারত যৌথ পরিকল্পনায় যুদ্ধ পরিচালিত হবে এবং নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে ভারতীয়রা স্বতন্ত্রভাবে যুদ্ধ করবে। আরও সিদ্ধান্ত হয় যে, আরাকানে কালাদান নদীর উপত্যকায় ও লুসাই পাহাড়ের পূর্বে চীন পাহাড়ের অন্তর্গত কালাম ও হাকা নামক দুটি কেন্দ্রে যুদ্ধ পরিচালিত হবে।
সুভাষ ব্রিগেডকে তিনটি ব্যাটেলিয়নে ভাগ করে নেওয়া হয়। প্রথম দলটি কালাদান নদীর উভয় তীর দিয়ে অগ্রসর হয়ে পলেতোয়া ও দলেৎমে অধিকার করে এবং কয়েকদিন পর ৬৪ কিমি দূরে ভারত সীমানার মউডক নামক ব্রিটিশ ঘাঁটি দখল করে। এখানে অস্ত্র ও খাবার সরবরাহ দুঃসাধ্য দেখে জাপানিরা ফিরে যেতে চাইলেও ভারতীয়রা রাজী হয় নি। ফলে একটি মাত্র কোম্পানিকে ক্যাপ্টেন সুরযমলের অধীনে রেখে বাকিরা ফিরে যায়। জাপানি সেনানায়ক ভারতীয়দের দেশপ্রেম দেখে এক প্লাটুন জাপানি সৈন্য বিদেশি সেনানায়কের অধীনে রেখে যান। 

এদিকে সুভাষ ব্রিগেডের বাকি দুটি দল জাপানিদের কাছ থেকে হাকা-কালাম সীমানার দায়িত্ব বুঝে নেয়। মণিপুরে ইমফলের পতন হলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, আজাদ হিন্দ ফৌজ কোহিমায় অবস্থান নেবে যাতে তারা ব্রহ্মপুত্র পার হয়ে বাংলায় প্রবেশ করতে পারে। গান্ধী ও আজাদ নামে অন্য দুটি ব্রিগেডও ইমফলের দিকে অগ্রসর হয়। ২১ মার্চ জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইংরেজ মুক্ত ভারতীয় অঞ্চলে নেতাজীর নেতৃত্বে অস্থায়ী স্বাধীন ভারত সরকারের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে বলে ঘোষণা করেন। বহু বাধাবিঘ্ন, খাদ্য ও অস্ত্রের অভাব সত্ত্বেও আজাদ হিন্দ ফৌজ ভারতের অভ্যন্তরে ২৪১ কিমি পর্যন্ত অগ্রসর হয়। 

স্বাধীনতা লাভের পর কয়েকটি ব্যতিক্রম বাদে আইএনএ-র প্রাক্তন সদস্যরা ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে অস্বীকার করেন। যদিও বিশিষ্ট সদস্যদের একটি বিরাট অংশ ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সাধারণ জীবনই অতিবাহিত করেছেন।

Tuesday 17 October 2017

ক্যানিং-এ পুড়লো বিজেপি-র অফিস, অভিযুক্ত তৃণমূলী


ওয়েবডেস্কঃ- পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার ক্যানিং-এ এক দল দুষ্কৃতী গতকাল আগুন লাগিয়ে দেয় বিজেপি-র দলীয় কার্যালয়ে। ঘটনাতে আহত হয়েছে তিন জন বিজেপি এবং আরএসএস কর্মী।আহত বিজেপি আরএসএস কর্মীদের ক্যানিং মহকুমা হাস্পাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কা জনক। রাতের দিকে তাকে কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাস্পাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বিজেপি নেতা এবং ২০১৪ সালে সাংসদ নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী শ্রী অভিজিৎ দাস নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে জানিয়েছেন, এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত শাসক দলের নেতা কর্মীরা। তিনি আরও বলেছেন, ক্যানিং-এ তৃণমূলের যুব সভাপতির নেতৃত্বে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ক্যানিং-এ BJP-র কার্যালয় ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে দেয়। পুলিশের সামনেই নাকি আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এর পর পাশের বিজেপি সমর্থকদের দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়, বলেও তিনি জানিয়েছেন।

জায়গার নাম লক্ষ্মীপুর, তবু নামাজের সময় দোকান বন্ধ বাধ্যতামূলক

ওয়েবডেস্কঃ- অতি বিতর্কিত এক নির্দেশিকা দিল লক্ষ্মীপুরের মেয়র আলহাজ্ব আবু তাহের। যার ফলে বিশেষ একটি ধর্মের রীতি রেওয়াজ অন্যদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার অভিজোগ উঠলো। কারণ প্রতি ওয়াক্ত নামাজের সময় লক্ষ্মীপুর শহরের সকল ধরনের দোকানপাট বন্ধ ঘোষণা করেছেন পৌর মেয়র আলহাজ্ব আবু তাহের। এ সময় মুসলমানের পাশাপাশি হিন্দুদেরও দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন তিনি। 

গত রবিবার সন্ধ্যায়, অঞ্চলের সকল প্রধান সড়কে মাইকিং করে নির্দেশিকাটি সকল ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। দোকান বন্ধের বিষয়টি মুসলমানরা সাধুবাদ জানালেও হিন্দুদের উপর অন্যায়ভাবে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে বলে মনে করেন অনেকেই। 

লক্ষ্মীপুর শহরের এক হিন্দু ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশের পত্রিকা বি.ডি. যোদ্ধা-কে জানান,"নামাজ মুসলমানদের ইবাদত, এখানে হিন্দুরা কেন নামাজের সময় দোকান বন্ধ রাখবে? তিনি অন্যায় ভাবে অন্য ধর্মের রীতি হিন্দুদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। এটা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না।" তার সুরে সুর মিলিয়ে আরেকজন মুসলিম ব্যবসায়ী বলেন, নামাজ পড়া  হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, এখানে কাউকে জোর করে নামাজ পড়ানো কি সঠিক হবে? তাছাড়া আমাদের ধর্মে নামাজ আছে, তাই না হয় দোকান বন্ধ করে নামাজ পড়তে গেলাম। কিন্তু হিন্দুরা দোকান বন্ধ করে কি করবে? তারাও কি নামাজ পড়তে হবে?

লক্ষ্মীপুর পৌর এলাকার আওয়ামীলীগের এক নেতা বলেন,  বাংলাদেশ কি এখন পাকিস্তান হয়ে গেল নাকি, যে জোর করে নামাজ পড়াতে হবে। এটা যার যার মনের ব্যাপার। তিনি বলেন আমিও নামাজ পড়ি এবং অন্যকে নামাজ পড়তে আহবান জানাই। তাই বলে কাউকে জোর করতে পারিনা। নামাজ নিজের প্রভুকে খুশি করার জন্য, তাই এটা নিজের মনের ভেতর থেকে আসতে হবে,জোর করে নয়।

Monday 16 October 2017

ধনতেরাসে ধাতু এবং গহনা কেনা শুভ কেন???

ওয়েবডেস্কঃ- ধনতেরাস কালি পূজার থিক আগের মুহূর্তে এক অতি প্রচলিত হিন্দু উৎসব। কালি পুজোর মুখে তাই ভারতজুড়ে সোনার দোকান গুলো ভিড়ে ঠাসা থাকে। এমন কি কোন কোন জায়েগাতে আবার বিয়ের মরসুমের থেকেও বেশি সোনার বিক্রি হয়ে এই ধনতেরাসের সময়। কিছুটা গয়না কিনে ধনলক্ষীকে খুশি রাখার চেষ্টায় রত মধ্যবিত্ত। তবে সোনার দামের দিকে তাকিয়ে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে হয় অনেককেই। এই সময় এখন শুধুই স্বর্ণালঙ্কার নয়ে গৃহ লক্ষ্মীকে সন্তুষ্ট করতে পাল্লা দিয়ে চলে ধাতুর ফার্নিচার, হোম আপ্লায়েন্স ইত্যাদির কেনা কাটা।

কিন্তু এই উৎসব কিসের, জেনে নেওয়া যাক সংক্ষেপেঃ-

ধনত্রয়োদশী বা ধন্বন্তরী-ত্রয়োদশী, যা সংক্ষেপে ধনতেরাস।
কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের এয়োদশী তিথিতে মূল্যবান ধাতুর জৌলুসে আকৃষ্ট হয়ে মা লক্ষী স্বয়ং আসেন গৃহস্থের বাড়িতে। এখানেই শেষ নয়, ধনতেরাস নিয়ে পূরাণে রয়েছে নানা রকমের গল্প, কেউ বলে ধনদেবতা কুবেরের আরধনায় এই উৎসব পালিত হয়।

   আবার কেউ কেউ বলে, একসময় দুর্বাশা মুনির অভিশাপে স্বর্গ থেকে বিতাড়িত হন লক্ষ্মী। রাক্ষসদের সঙ্গে লড়াই করে ধনতেরাসেই দেবতারা ফিরে পান দেবী লক্ষ্মীকে। হারিয়ে যাওয়া লক্ষ্মীকে ফেরানোর উৎসবই হচ্ছে ধনতেরাস। 

  আছে আরও ঘটনাবলি যার অন্যতম, রাজা হিমের ছেলেকে বিয়ের চতুর্থ দিন যমের হাত থেকে বাঁচাতে বধূ একটা নতুন পরিকল্পনা করলেন। প্রচুর ধনরত্ন, সোনা-রূপো দিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে তা ঘিরে রাখেন। প্রদীপের আলোয় সোনার জৌলুসে চোখ ধাঁধিয়ে যায় যমের। চোখে আলোর ঝলকা লাগে যমের। পথ ভুল হয়, বেঁচে যায় রাজা হিমের পুত্র। এর থেকেই নাকি শুরু হয় ধনতেরাসের বিশেষ দিন।

  তবে এর পিছনে যেই ঘটনাই থাক না কেন, মূল বিষয়টা হল বাকি হিন্দুদের মতই বাঙালি হিন্দুর উৎসবের তালিকাতেও এখন রয়েছে ধনতেরাস। হুজুগে বাঙালি তেরো পার্বনের তালিকায় ঢুকিয়ে নিয়েছে এই উৎসবকেও। এর মাধ্যমে যেন বাঙ্গালী হিন্দু ঘুরপথে বার্তা দিয়ে বলছে, যে যাই বলুক আমরাও বাকি হিন্দুদের থেকে মোটেই আলাদা নই। তাইতো কালিপুজোর আগে সোনা, ধাতুর ফার্নিচার, হোম আপ্লায়েন্স ইত্যাদির দোকানে এত ভিড়।
loading...
loading...