ওয়েবডেস্কঃ- ভুত আদৌ আছে না কি এসবই মনের ভুল, এই বিষয় নিয়ে তর্কের শেষ নেই। অনেকেই অনেক ভাবে বিষয়টাকে কাকতালীয় প্রমানের চেষ্টা করেন। অনেকে আবার এই ভূতুড়ে ঘটনাকে সত্যি মনে করেন। অনেকেই আবার বলেন ভগবান নেই কিন্তু ভূত রয়েছে। অনেকে আবার ফিজিক্স দিয়ে বিষয়টা ব্যাখ্যা করেন। কিন্তু যে যাই করুক ভূতুড়ে ব্যাপার নিয়ে সারা পৃথিবীর মানুসের মধ্যেই এক বিরাট কৌতূহল রয়েছে। অন্যান্য দেশের মতই ভারতেও বিশ্ব বিখ্যাত বেশকিছু ভূতুড়ে জায়েগা রয়েছে। বেশ কুখ্যাত এমনই ১৬-টা জায়েগার ব্যাপারে বিশেষ কিছু তথ্য দেওয়া হল।
১. ভানগর দুর্গ – পৃথিবীর অন্যতম একটি ভুতুরে স্থান। ভানগর দুর্গ
শুধুমাত্র ভারতের সবচেয়ে ভৌতিক জায়গাই নয় সারা বিশ্বের মধ্যেও এটি ভৌতিক
স্থানগুলোর শীর্ষে রয়েছে। এই দুর্গ রাজস্থানে অবস্থিত, ভারত সরকারের
পক্ষ্ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দুর্গকে ভৌতিক বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই
দুর্গে প্রবেশের জন্য কতৃপক্ষের আদেশ ও নিয়ম খুব কঠোর এবং যারা এখানে সময়
কাটিয়ে গেছেন, তারা তাদের গল্পে অস্বাবিক ক্রিয়াকলাপের কথা বর্ণনা
করেছেন।
২. বৃজরাজ ভবন প্রাসাদ- কোটা, রাজস্থান যেখানে শ্রী বার্টন
ও তার পুত্রকে খুন করা হয়েছিল। রাজস্থানের কোটার বৃজরাজ ভবন হলো একটি
বিশাল রাজকীয় স্থান। এখানে প্রবেশ নিষিদ্ধ, এখানকার রক্ষীরাও ভূতুরে
ক্রিয়াকলাপ সম্পর্কে অভিযোগ জানিয়েছেন। ব্রিটিশ আমলে জনৈক বার্টন এবং তার
ছেলেকে এখানে খুন করা হয়। এখানকার অধিবাসী ও রক্ষিবাহিনীদের থেকে এই
স্থানের বিভিন্ন ভৌতিক অভিজ্ঞতার কথা গণমাধ্যমের সুত্রে জানা গিয়েছে।
৩. ডুমাস বীচ – গুজরাটের সবচেয়ে সুন্দর বীচ, এখানে একজন মানুষ রাত কাটানোর জন্য গেছিলেন, কিন্তু আর ফেরেননি। গুজরাটের ডুমাস সৈকত হলো অন্যতম সুদৃশ সৈকত কিন্তু জায়গাটি মোটেই উপভোগ্য
নয় কারণ ভারতীয় সরকার স্থানটিকে ভূতুরে স্থান হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
সুরাটের স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে কোনো ব্যক্তি যদি এই সমুদ্র সৈকত
পরিদর্শনে এসে এক রাত কাটান, তাহলে তারা আর কখনই ফিরে আসেন না। এই জায়গায়
আগে একটি হিন্দু শ্মশান ছিল।
৪. কুদহারা – রাজস্থানের ভৌতিক গ্রাম। রাজস্থানের দ্বিতীয় ভয়ংকর জায়গাটি হলো কুদহারা, ১৯৯০ সাল থেকে এই গ্রাম
ভৌতিক গ্রাম হিসাবে পরিচিত। একটি উপকথা অনুসারে, আট শতাব্দীর অধিক ধরে
সেখানে থাকা গ্রামবাসীরা হঠাত এক রাত্রিতে বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং আর ফিরে
আসেনি। কোনো ব্যক্তি এই গ্রামে জমি ও সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করলে গ্রামে
উপস্থিত আত্মা তাকে মেরে ফেলে।
৫. ডি’সুজা বস্তি – মহারাষ্ট্রের
সর্বাধিক ভৌতিক স্থান। মুম্বাইবাসীরা মহিমের ডি’সুজা বস্তির সঙ্গে খুব
ভালোভাবে পরিচিত কারণ এটি মহারাষ্ট্রের পোড়ো জাগাগুলির মধ্যে সবথেকে
ভয়ানক জায়গা। স্থানীয় লোকদের মতে এই জায়গায় একটি মহিলার আত্মা আছে,
যিনি কুয়ো থেকে জল তুলতে গিয়ে মারা যান। তিনি কারো ক্ষতি করেন না কিন্তু
মানুষদের এই গ্রামের কাছে ঘেসতে দেন না।
৬. বৃন্দাবন সোসাইটি –
থানের সর্বাধিক ভৌতিক স্থান, যেখানে এক অদৃশ্য আত্মা রক্ষীদের থাপ্পর
মারেন। বৃন্দাবন সোসাইটিকে থানের সবচেয়ে ভোতিক স্থান বলে গন্য হয়, যেখানে
একজন মানুষ অনেক বছর আগে তার জীবন হারিয়েছেন। রক্ষীরা তাদের বয়ানে
জানিয়েছেন যে রাতে তারা প্রহরারত অবস্থায় কেউ চোখের পাতা বুঝলে সেই সময়
কেউ একজন এসে নাকি তাদের সজোড়ে থাপ্পর মারে !
৭. তাজমহল প্রাসাদ
হোটেল – সম্পূর্ণ বারান্দা জুড়ে ভুতুরে আনাগোনার কথা শোনা যায়। হ্যাঁ এটা
সত্য! বলা হয়ে থাকে যে, তাজমহল প্রাসাদের স্থপতি কাঠামো অনুসারে হোটেল
তৈরি না করার জন্য হোটেলের ভিতরে খুন হন। অনেকে হোটেলের বারান্দার প্রবেশ
দ্বারে তাঁর ভূত দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। সেখানে না যাওয়া অবধি আপনার
পক্ষে এর সত্য উত্ঘাতন করা সম্ভব নয়।
৮. আসামের জাতিঙ্গা – অসমাধিত পাখিদের আত্মহত্যার জন্য এই স্থান বিখ্যাত। আসামের জাতিঙ্গা পাখিদের জন্য একটি সুন্দর জায়গা। অসমাধিত পাখি
আত্মহত্যার কারণে জায়গাটি বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত। ঘটনা খারাপের দিকে যায় যখন
লক্ষ্য করা হয় পাখিরা সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ৬.৩০ থেকে ৯ টার মধ্যে
মারা যায়। এই ঘটনাটি বুঝতে বিভিন্ন গবেষণা হয়েছে, কিন্তু কিছুই সুরাহা
পাওয়া যায়নি।
৯. রাজ কিরণ হোটেল – মুম্বাইয়ের অতিপ্রাকৃত ঘটনার জন্য প্রখ্যাত এক স্থান। হোটেলটিতে অতিপ্রাকৃত ক্রিয়াকর্মের কারণে আপনাকে আপনার নিজের ঝুঁকিতে রাজ
কিরণ হোটেল দেখার অনুমতি নিতে হবে। হোটেলের অধিবাসীগণ প্রচন্ড কম্পনের
অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন এবং বিছানার চাদর নিজে থেকেই দূরে সরে যায় বলেও
জানিয়েছেন। পোড়ো রুমটি অভ্যর্থনার পিছন দিকে একটি নিরিবিলি কোণে অবস্থিত।
১০. জি.পি. ব্লক – মিরাটে অবস্থিত একটি স্থান যেখানে চার জন পুরুষকে
সুরাপান করে আমোদ করতে দেখা যায়। মীরাটের জি.পি. ব্লকে যারা থেকেছেন তারা
বলেন যে তারা নাকি চারটে ছেলেকে সুরা সেবন করতে ও আড্ডা মারতে দেখেছেন!
যাইহোক, কিছু সময় পর পরিস্থিতিটি আরও ভুতুড়ে হয়ে যায় এবং তাদের কাউকেই
দেখা যায় না। তাই জায়গাটি অতিপ্রাকৃত কার্যক্রম পর্যবেক্ষকদের কাছে
দর্শনীয় হয়ে উঠেছে।
১১. আলেয়া প্রেতাত্মা দীপ্তি – পশ্চিমবঙ্গের
একটি স্থান, যেইসব মত্সজীবিরা এই দীপ্তিকে অনুসরণ করেছেন তারা আর ফিরে আসেন
নি পশ্চিমবঙ্গের প্রেতাত্মা আলেয়া, মার্শাল প্রেতাত্মা নামেও পরিচিত।
মার্শাল লাইট দ্বারা অনেক জেলে বিভ্রান্ত হয়েছেন এবং এটা বিশ্বাস করা হয়
যে, কেউ যদি সেই আলো কে অনুসরণ করে, তারই বিপদ ঘনিয়ে আসে। যেসব জেলেরা
অন্ধভাবে মার্শাল লাইটের পথ অনুসরণ করেছেন তারা কখনো ফিরে আসেন নি।
১২. দার্জিলিং এর ডাউন হিল – বিচিত্র অপ্রাকৃতিক ক্রিয়াকলাপ এবং মস্তকহীন
বালকের ভ্রমনের জন্য পরিচিত। দার্জিলিঙ্গের কুর্সেং-এ অবস্থিত ডাউন হিল,
বেড়াবার জন্য এটি একটি সুন্দর জায়গা, কিন্তু এটিকে দেশের সবচেয়ে ভৌতিক
স্থান গুলোর মধ্যে একটি বলে গণ্য হয়। ডাউন হিল-এর কাছে মেয়েদের একটি
বিদ্যালয় অতিপ্রাকৃত ও অস্বাভাবিক কাজকর্মের প্রত্যক্ষ্ সাক্ষী এবং অনকেই
পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে মুন্ডহীন একটি ছেলেকে চলাফেরা করতে দেখেছে। এর
ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলা যায় যে ডাউন হিল-এর বনে অসংখ্য খুন সংঘটিত
হয়েছে।
১৩. সঞ্জয় ভ্যান – নিউ দিল্লির এক ভৌতিক স্থান। সঞ্জয়
ভ্যান নিউ দিল্লির একটি বিশাল বনভূমি। মানুষ এখানে একটি লাল শাড়ি পরিহত
মহিলা কে দেখেছন যিনি হঠাতই দৃশ্যমান হন এবং সেখানকার মানুষজন আতঙ্কিত
হওয়া মাত্রই আবার অদৃশ্য হয়ে যান।
১৪. রামোজি ফিল্ম সিটি –
যেখানকার আলো নিজে থেকেই জ্বলে আবার নিজে থেকেই নিভে যায়। এটাও একটা
ভুতুরে জায়গা? রামোজি ফিল্ম সিটি অনেক অস্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপের সাক্ষী।
বলা হয়ে থাকে যে, এখানকার আলো নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যায় এবং একবার
অন্ধকার হলে নিজে থেকেই ফিরে আসে। বাতি হাতে পাহারাদারেরা আহত হয় এবং
অবশিষ্ট খাওয়ার নিজের মতো বিক্ষিপ্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
১৫. আগ্রাসেন কি বাওলি – দিল্লির জন্তর-মন্তরের নিকট একটি ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ। এটা দিল্লির একটা ঐতিহাসিক নিদর্শন এবং যন্তর মন্তর থেকে হাটা পথের
দুরত্বে। কিন্তু জনশ্রুতি অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি পাঁচ মিনিটের বেশি এটাকে
দেখলে আত্মহত্যা করেন এবং এর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখা পাওয়া যায়নি।
১৬. সানিওয়ারওয়াদা দুর্গ – পুনের প্রখ্যাত একটি ভৌতিক স্থান। এটি পুনের
একটি বিখ্যাত দুর্গ এবং মহারাষ্ট্রের প্রাচীনতম দুর্গগুলির মধ্যে একটি।
অন্ধকার হয়ে যাওয়ার পর এই দুর্গে যাওয়া ঠিক নয়, কারণ বলা হয় যে,
দুর্গটিতে কোন যুবরাজের আত্মা তাড়িয়ে বেড়ায় যাঁকে তাঁর নিজের খুড়তোত
ভাইবোন ও পরিবারের সদস্যরাই খুন করেছিলেন। ভৌতিক কার্যকলাপ প্রত্যেক
পূর্ণিমার রাতে আরো বেশি করে দেখা যায়।
No comments:
Post a Comment