ওয়েবডেস্কঃ-এই মুহূর্তে ভারত হল এমন এক দেশ যারা পৃথিবীতে সব থেকে বেশি হাতিয়ার আমদানি করে। কারণ এই দেশ সাত দশক স্বাধীন হলেও, হাতিয়ার তৈরির দিকে কোন দিনই দেশের সরকার খুব একটা জোড় দেয়নি। যার ফল সেনাদের ভুগতে হয়ে পদে পদে। সেই তিন দশক আগে কেনা বোফর্স আর্টিলারি গানের পর সেনারা আজও নতুন আর্টিলারি গান পায়েনি। তবে দেরিতে হলেও আমাদের সরকার বুঝেছে শুধু বিলিয়ন ডলার খরচ করে অস্ত্র কিনে কখনোই বিশ্বের দরবারে নিজেকে
শক্তিশালী দেখানো যায় না, নিজেদেরও অস্ত্র বানানোর ক্ষমতাও দেখাতে হয়। আর
যদি পৃথিবীর টপ ওয়েপন ইন্ডাস্ট্রি গুলি দেখি ,তবে সেখানে সরকারের নিয়ন্ত্রিত কোম্পানির থেকে বেসরকারি
কোম্পানি গুলোর প্রতিপত্তিই বেশি !!
দেরি হলেও অনেক দেরি হওয়ার আগে ভারতীয় বেসরকারি
বিভিন্ন কোম্পানি গুলি এখন ডিফেন্স ইকুইপমেন্ট তৈরির দিকে নজর দিয়েছে। কারণ ভারত সরকার ডিফেন্স নিয়ে নিজেদের অবস্থানটা বদলে ফেলেছে। তবে এই নিয়ে প্রচুর জল ঘোলাও হচ্ছে। বামেরা এই অবস্থানকে "ডিফেন্সকে বেচে দেওয়া" বলেও উল্লেখ করে থাকে। তবে দেশের কোম্পানি গুলোর মধ্যে টাটা, L&T, মাহিন্দ্রা, রিলায়েন্স, কল্যানী গ্রুপের মতো সংস্থা গুলি নিজেদের ডিফেন্স
রিসার্চ প্রতিস্ঠান গড়ে তুলছে, যেখানে এখন দেশের ছেলেরাই কাজ করছে। যদিও
এগুলি অনেক আগেই করা উচিত ছিল, কিন্তু এখন
যেহেতু শুরু হয়েছে এবং তার গতিও যথেস্ট ভালো, তাই আশা করা যায় আগামী দশ
বছরে ভারতীয় বেসরকারি ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিতে এক বিরাট বিপ্লব আসবে।
ভারত আমেরিকা থেকে কদিন আগেই ১৪৫ টা আলট্রা লাইট M-777 হাউইটজার কিনেছে। প্রতিটি হাউইটজারের মূল্য প্রায় ₹৪০
কোটি টাকা। এত টাকা খরচ করে আমরা ওয়ার্ল্ড ক্লাস ওয়েপন কিনলাম, সেতো ভালো কথা,
কিন্তু এতে আমাদের সীমাবদ্ধতা না কমে উল্টে বেড়ে গেল।
কল্যানী
গ্রুপ একই আল্ট্রালাইট হাউইটজার তৈরী করেছে এবং এর স্পেশিফিকেশন, আমেরিকান
M-777 এর মতোই। কল্যানী গ্রুপের Bharat 155mm/39 ক্যালিবারের এই হাউইটজার ওয়েট সাড়ে চার টনের কম, ফলে এটিকে IAF এর Mi-17 দিয়েও বহন করা
যাবে, এটিতে টাইটেনিয়াম, এলুমেনিয়াম এর মতো দামী ধাতু ব্যাবহার করে একে
হালকা অথচ মজবুত করা হয়েছে, ফায়ারিং রেঞ্জ ও ৩৫ থেকে ৪০ করা হয়েছে। অর্থাৎ
সবদিক থেকে পার্ফেক্ট এবং M-777 এর পর ভারতীয় আর্মি যে বিশাল সংখ্যক
Bharat-155mm/39 ক্যালিবারের আল্ট্রালাইট হাউইটজার অর্ডার দিতে চলেছে, তা চোখ
বন্ধ করেই বলা যায়। মজার বিষয় এই হাউইটজারের গুলির দাম M-777 এর চার ভাগের এক ভাগ
হবে। এবার আপনারাই ভেবে দেখুন কতটা সাশ্রয় হয়ে যাচ্ছে, যখন দেশের ভিতর আমরা নিজেরাই ওয়েপন বানাচ্ছি !!!
তাই আমাদের সরকারের উচিত দেশের বিভিন্ন বেসরকারী ওয়েপন ইনডাস্ট্রি
গুলির সব দিক দিয়ে পাশে দাড়ানোর। শুধু মাত্র রাজনৈতিক কারনে একটা
ইন্ডাস্ট্রি ধংস হতে পারে, তার অনেক উদাহরন এই ভারতে আছে। তাই ভারতের সমস্ত
রাজ্য সরকার গুলিকেও অন্তত এই ব্যাপারে, কেন্দ্রের সাথে সহমত হওয়া উচিৎ এবং সমস্ত রাজনৈতিক দল গুলোকে এই বিষয় নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করা উচিৎ।
No comments:
Post a Comment