ওয়েবডেস্কঃ- ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে পশ্চিমবঙ্গের বারাসাত এবং নদীয়ার কৃষ্ণনগরে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন,"বাংলাদেশে অত্যাচারিত হয়ে পালিয়ে আসা শরণার্থীরা আমার পরিবার। তাঁরা ভারতে থাকবেন। কিন্তু
ফিরে যেতে হবে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের।" তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়ে সেই প্রতিশ্রুতি ভোলেন নি। অনেক রাজ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ করা মুসলিমদের চিহ্নিত করনের কাজ। তবে বলে রাখা ভাল, বাংলাদেশে অত্যাচারিত হয়ে পালিয়ে আসা হিন্দুদের, ভারতীয় নাগরিকত্ত দানের কাজ মোটেই সুষ্ঠু ভাবে করতে পারা জায়েনি বাম-কংগ্রেস-টিএমসি দের মত দল গুলোর বিরোধিতার জন্য।
সেই সময় নরেন্দ্র মোদীর প্রতিশ্রুতিকে সার্বিকভাবে সমর্থন জানানো যোগী আদিত্যনাথ এখন ভারতের সবথেকে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। আশানরূপ ভাবেই তাঁর প্রশাসন এবার উদ্যোগী হল নিজ রাজ্য থেকে বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে উত্তর প্রদেশ থেকে বের করে দিতে। বিজেপির যোগী আদিত্যনাথ সরকারের
মন্ত্রিসভায় ইতিমধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েও গেছে। পশ্চিমবঙ্গ ত্রিপুরা ছাড়াও উত্তরপ্রদেশে প্রচুর বাঙালির বসবাস রয়েছে।
উত্তর প্রদেশের রাজ্য সরকারের দাবি, তাদের রাজ্যে আট লাখ বাংলাদেশি
রয়েছে। তাদের একটা বড় অংশই মুসলিম অনুপ্রবেশকারী। শুধুমাত্র তাদেরই উৎখাত করার লক্ষ্যে প্রতিটি জেলার পুলিশ সুপারদের
বাংলাদেশিদের তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে বলা
হয়েছে, এই বাংলাদেশি মুসলিমদের চিহ্নিতকরণ কাজ শুরু হচ্ছে। সেই তালিকা তৈরি করে
পাঠানো হবে রাজ্য সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে। এরপরই এদের বিতাড়নের উদ্যোগ নেবে
সরকার। এ প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগবে আগামী বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত।
তবে উত্তর প্রদেশের পুলিশের সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমে এ কথাও বলা
হয়েছে, এই চিহ্নিতকরণ কাজ অত্যন্ত কঠিন। কারণ, উত্তর প্রদেশে রয়েছে প্রচুর
বাঙালির বাস। অনুপ্রবেশ করা অনেকের কাছে আবার রয়েছে ভোটার কার্ড সহ আঁধার কার্ডও। বিভিন্ন উপায়ে তারা ঐসব জোগাড় করে নিয়েছে। তাই ভারতীয় যেসব
বাঙালি উত্তর প্রদেশে কয়েক দশক ধরে বাস করছে, তাদের তো পুলিশ বাংলাদেশি বলে মনে করে হেনস্তা করতে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, কারও আঁধার কার্ড বা ভোটার
পরিচয়পত্রে বাংলাদেশি মুসলিম বলে কোনো কথা নেই। মুখের ভাষাই মূল কথা।
উত্তর প্রদেশ হিন্দি ভাষাভাষী রাজ্য। এখানের অধিকাংশ পুলিশও বাংলা ভাষা
জানেন না। ফলে তাদের পক্ষে বাংলাদেশি চিহ্নিতকরণ কাজ কঠিন হয়ে পড়তে পারে। তাই এখন দেখার বিষয় হল বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারী তাড়ানোর ষোলআনা ইচ্ছে যোগীর থাকলেও কাজটা সুষ্ঠু ভাবে করার জন্য তিনি কি উপায়ে বের করেন।
No comments:
Post a Comment