Thursday 21 September 2017

এমন ভারত প্রেম শুধু বাঙ্গালীই দেখাতে পারে

বিগত সাত বছর ধরে জাতীয় পতাকাকে স্যালুট জানাতে আসে এই ব্যক্তি, কারণ জানতে পেরে পুলিশের চক্ষু চড়কগাছ।

বেশ কয়েক বছর ধরে জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় সংগীত নিয়ে ভারতীয় দের মধ্যে সম্মানের ঘাটতির জন্য, ভারত সরকার এবং সুপ্রীম কোর্ট দেশের প্রত্যেক সিনেমাহলে সিনেমা শুরু হওয়ার আগে জাতীয় সংগীত চালানোর নির্দেশিকা শুরু করে, এবং জাতীয় সংগীত চলাকালীন সিনেমা হলে উপস্থিত প্রত্যেকের জাতীয় সংগীত কে সন্মান জানিয়ে দাঁড়ানোর আবেদন করে।

এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন হলো, নিজের দেশের জাতীয় সংগীতকে সন্মান জানানোর জন্য মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট এবং সরকারকে এরকম পদক্ষেপ কেন নিতে হলো? আমাদের ভারতীয়দের কি দেশের প্রতি কোনো আবেগ নেই আর?

আমরা এরকম অনেক ঘটনাই শুনেছি, যেখানে কোনো এক ব্যক্তি জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় সংগীতের অপমান করেছে, এবং সেটা নিয়ে অনেক বড় ঝামেলাও সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের মধ্যে আজকাল তিরঙ্গার সামনে নমন করার প্রবণতা অনেক কমে গেছে। মানুষের এখন জাতীয়তাবাদী হওয়া পছন্দ হচ্ছেনা, তাদের কাছে জাতীয়তাবাদী এখন ব্যাকডেটেড হয়ে গেছে।

জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া এবং জাতীয় পতাকার সন্মান করা কিন্তু মানুষের ব্যক্তিত্বের পরিচয় দেয়, কিন্তু আজকাল কোথাও রাষ্ট্র্গান বেজে উঠলে অনেকেই দাঁড়াতে চাননা। কিছু কিছু মানুষ তো এমনও আছে, যাঁরা অন্যদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, তাঁদের নজরান্দাজ করে সেখান থেকে চকে যায়। এরকম সময় যখন জাতীয় সঙ্গীত এবং জাতীয় পতাকার ওপর মানুষের সম্মান কমে আসছে, তখন এই মানুষটি আমাদের সামনে জাতীয়তাবাদের এক জলজ্যান্ত দৃষ্টান্ত কায়েম করলো।

আমরা এমন একজন মানুষের কথা বলছি, যে বিগত সাত বছর ধরে বিধানসভার সামনে জাতীয় পতাকাকে স্যালুট করে জাতীয় সংগীত গায়।
হীরালাল সামন্ত নামে এক ব্যক্তি রোজ সকাল 9:30 এ পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে স্যালুট করে জাতীয় সংগীত গায়, হীরালাল বাবু হজরতগঞ্জের এক হোটেলে কাজ করেন, লোকে ওনাকে " বাঙালি বাবু " ও বকে ডাকে। হীরালাল এর সাত বছর ধরে এই কাজ করার একটাই উদ্যেশ্য সেটা হলো, উনি এরকম করে দেশের যুব সমাজের মধ্যে জাতীয়তাবাদী ফিলিংস আনতে চান।

হীরালাল বাবু বলেন, আমরা অনেক কষ্টে স্বাধীনতা পেয়েছি, আমাদের উচিত সেটার সন্মান করা। হীরালাল এর মধ্যে এই ভাবনা একটি সিনেমাহলে গিয়ে এসেছিল, আর তাঁর পর থেকে উনি রোজই এরকম করে আসছেন।

পশ্চিমবঙ্গের হাবরা এক ছোট গ্রামের বাসিন্দা হীরালাল, 2010 থেকে এই কাজ করে আসছেন। হীরালাল এর অনুসারে প্রথমে যখন উনি তিরঙ্গার সামনে স্যালুট করে জাতীয় সঙ্গীত গাইতেন, তখন ওনাকে দেখে অনেক পুলিশই অবাক হয়ে যেত, অনেকবার পুলিশ আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতো, আমি কেন এমন করছি? কিন্তু যখন পুলিশ জানতে পারলো আমি কেন এমন করছি, তখন ওরা আমাকে বাহবা দিত, আর আমাকে এরকম করতে দেখে সবাই বলতো বাঙালি বাবু ভালো কাজ করছে। 

No comments:

Post a Comment

loading...
loading...