Thursday 21 September 2017

সন্তানসম্ভবা ৭০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম, প্রবল চাপে বাংলাদেশ


ওয়েবডেস্কঃ- মানবিকতা দেখিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েও নিস্তার নেই বাংলাদেশের। উদ্বাস্তু হয়েও প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম নারী সন্তান-সম্ভবা। কক্সবাজারের আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে গত কয়েক দিনেই প্রায়ে ২০০ রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয়েছে। এই হিসাবে এখন প্রতিদিন গড়ে প্রায় আট থেকে দশটি করে শিশুর জন্ম দিচ্ছে উদ্বাস্তু রোহিঙ্গা মুসলিম নারীরা। এইভাবে চলতে থাকলে আর মাত্র কয়েকমাসের মধ্যেই প্রায়ে ১ লক্ষ নবজাতকের দায়িত্ব এসে পড়বে দরিদ্র বাংলাদেশের সরকারের উপর। বিষয়টি অত্যন্ত চিন্তার। কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিস থেকে পাওয়া এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশের একাধিক পত্রিকা।

  কক্সবাজার জেলার ফ্যামিলি প্ল্যানিং দপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. পিন্টু ভট্টাচার্য বলেছেন,"উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি, ইনজেকশন ও কনডম বিতরণ কর হয়েছে। অন্তত দেড়শ নারীর মধ্যে ঐ জন্মনিরোধক বড়ি ও পঞ্চাশ জনের মতো পুরুষের মধ্যে কনডম বিতরণ করা হয়েছে। তিন মাসের বন্ধ্যাকরণ ইনজেকশনও প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে উদ্বাস্তু রোহিঙ্গা মুস্লিমদের মধ্যে জন্ম নিয়ন্ত্রন করার ইচ্ছা একেবারেই নেই।" বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে তাদের জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি সরবরাহ করা হলেও, অশিক্ষিত ধর্মীয় কু-সংস্কারাচ্ছন্ন হওয়ার ফলে তারা এসব ফেলে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগেরই কর্মীরা।

  ডা. পিন্টু ভট্টাচার্য আরও জানিয়েছেন,"রোহিঙ্গারা এখনও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। সরকারের তৈরি ক্যাম্পে তাদের একসঙ্গে রাখা হলে এবং নিবন্ধন কার্য শেষ হলে আমরা পুরোদমে এই কর্মসূচি হয়েতো বাস্তবায়িত করতে পারব। তখন স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিও প্রয়োগ করা যেতে পারে।" ২৬ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এদের বেশিরভাগই শিশু। তবে প্রসূতির সংখ্যাও অনেক। বিপুল এই জনগোষ্ঠীর চাপের পাশাপাশি অনাগত এই বিপুল সংখ্যক শিশুর ভরণ-পোষণের দায়িত্বও চাপতে যাচ্ছে বাংলাদেশের কাঁধে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে এসব নারী ও শিশু মারাত্মক অপুষ্টির শিকার। এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে পরিবার পরিকল্পনার আওতায় আনতে পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এজন্য রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন ও ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী বিতরণের কথা জানান জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালাম।

  রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, আগত মধ্যবয়সী নারীরা প্রায়ে প্রত্যেকেই ১০ থেকে ১২টি সন্তানের মা। এর চেয়ে কমবয়সীদেরও রয়েছে অন্তত চার থেকে পাঁচটি সন্তান। এমনকি ১২-১৩ বছর বয়সী বিবাহিতদেরও একটি করে শিশু রয়েছে। ঐ বয়সী অনেকেই এক বাচ্চার মা হওয়া সত্যেও সন্তান-সম্ভবা। এরা প্রত্যেকেই অশিক্ষা এবং ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কু-সংস্কারাচ্ছন্ন হওয়ার ফলে জন্ম নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় অভ্যস্ত নন। তাদের সঙ্গে কথা বলে অন্তত এমনটাই জানা গেছে।

No comments:

Post a Comment

loading...
loading...