Wednesday 13 September 2017

দেশে তীব্র খাদ্য সঙ্কট, ভাতের জন্য মায়ানমারের কাছে হাত পাতলো বাংলাদেশ


ওয়েবডেস্কঃ- মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশদ্রোহী রোহিঙ্গা মুসলিমদের উচ্ছেদের ডামাডোলের মধ্যেই সেই দেশ থেকে চাল আমদানির চুক্তি করতে মায়ানমার গেলেন ইসলামিক রাষ্ট্র বাংলাদেশের খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। গত ৬-ই সেপ্টেম্বর ২০১৭ তে খাদ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মায়ানমার যায়ে। দলটি মায়ানমার থেকে বছরে ১০ লাখ টন চাল আমদানির ব্যাপারে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরও (এমওইউ) করেছে। পাশাপাশি দ্রুত ২ থেকে ৩ লক্ষ্য টন চাল আমদানির ব্যাপারেও চুক্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

  বাংলাদেশর প্রতিনিধিদলে খাদ্যমন্ত্রী ছাড়াও আছেন সেদেশের খাদ্য মন্ত্রালয়ের অতিরিক্ত সচিব আতাউর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিঞা, খাদ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী মোহাম্মদ হেলাল হোসেন। এর আগে ৪ সেপ্টেম্বর খাদ্যসচিব মো. কায়কোবাদ হোসেন ও উপসচিব জহিরুল ইসলাম খাদ্যনিরাপত্তা বিষয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলম্বিয়া যান। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস রিলিজ অনুযায়ী, মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবের একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণ সাধারণভাবে পরিহার করার কথা বলা হয়েছে। অবশ্য জাতীয় স্বার্থে বিশেষ ক্ষেত্রে তা করা যেতে পারে। বাংলাদেশে এখন খাদ্যাভাব চরমে। অতি নিম্ন মানের মোটা চালের দামও কেজি প্রতি ৪৫ টাকা বা তার বেশি। চালের উচ্চমূল্য সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়িয়ে দিয়েছে। সংকট কাটাতে খাদ্য মন্ত্রক চলতি বছর ১৫ লাখ টন চাল আমদানির পরিকল্পনা নিয়েছে। মাঝারি মানের চালের দর কেজিতে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা ও সরু চাল ৫২ থেকে ৫৮ টাকা। দেশের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১০ লাখ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করলেও গত চার মাসে মাত্র ২ লাখ ৫৫ হাজার টন চাল সংগ্রহ করতে পেরেছে খাদ্য দপ্তর।

  এর আগে বাংলাদেশ ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের সঙ্গে ১০ লাখ টন করে মোট ৩০ লাখ টন চাল আমদানির জন্য চুক্তি করেছে। এর মধ্যে ভিয়েতনাম থেকে ৯০৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকায় আড়াই লাখ টন চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। ওই চালের মধ্যে ভিয়েতনাম থেকে প্রায় ১ লাখ টন চাল দেশে পৌঁছেছে। আর আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে এসেছে আরও ২৭ হাজার টন চাল। ভারত থেকেও গত মাসে বাংলাদেশের খাদ্য সংকট মেটানোর জন্য এক জাহাজ চাল পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তা ছিল প্রয়োজনের চেয়ে অনেক কম।

  রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে উত্তেজনা এখন আন্তর্জাতিক মাত্রা পেয়েছে। এমন সময়ে চাল আমদানির জন্য মায়ানমারের সঙ্গে চুক্তি কতটুকু সফল হওয়া যাবে—খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের কাছে এমন প্রশ্ন করা হলে সে দেশের পত্রিকা প্রথম আলোকে তিনি বলেন,‘মায়ানমার সফরের আগে আমি প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। তাঁরা আমার এই সফর অনুমোদন করেছেন। রাজনৈতিক কারণে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা থাকতে পারে। কিন্তু তাই বলে বাণিজ্য তো বন্ধ থাকতে পারে না।’ তবে যে যাই বলুক ধর্মীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মায়ানমারের সব রকমের অভিযানের পরেও, অপর এক ইসলামিক রাষ্ট্র বাংলাদেশের এই পদক্ষেপ কিন্তু,"আপনি বাঁচলে বাপের নাম" এই প্রাচীন বাংলা প্রবাদ কেই প্রমাণ করে দিল।

No comments:

Post a Comment

loading...
loading...