কলকাতাঃ- ভারত ও
চীনের মধ্যের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় এবং দেড় মাসের বেশি সেনা অবস্থানের সাথে সাথে সিকিম সীমান্ত এলাকার উত্তেজনা আরও তীব্র হয়ে উঠছে। পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব সীমান্তে
নিরাপত্তা শক্তিশালী করার
জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনী এই বছরের চলতি আগস্ট মাসের মধ্যেই দেশে তৈরি অত্যাধুনিক অস্ত্রসম্বলিত উন্নত মানের হালকা হেলিকপ্টার এএলএইচ
রুদ্র মোতায়েন করতে চলেছে।
দেড় মাসের বেশি সময় ধরে দুই দেশের সেনার মুখোমুখি অবস্থানের এই অবস্থাকে ইতিমধ্যেই ১৯৬২ সালের যুদ্ধের পর থেকে সব চেয়ে বড় রকমের বৈরি আচরণ বলে মনে
করা হচ্ছে। এই টান টান উত্তেজনার
মধ্যে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে,“আসামের
উত্তর-পূর্ব অংশে ১০ টি এএলএইচ
রুদ্র
এবং রাশিয়া থেকে কেনা এম.কে-৪ এর ১ টি হেলিকপ্টার স্কোয়াড্রন মোতায়েন করা হবে”। পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত অঞ্চলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই
কার্যকরী হতে যাওয়া অতিরিক্ত হেলিকপ্টার
ঘাঁটি নির্মাণের সাথে সাথে এই হেলিকপ্টার স্কোয়াড্রন মোতায়েন হবে।
চীনের সরকারি পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস ইতিমধ্যেই জানিয়েছে এই নতুন হেলিকপ্টার স্কোয়াড্রন মোতায়েনের ফলে সীমান্তে উত্তেজনা বাড়তে পারে। যদিও গতমাসে ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি চিন সেনার সেনা মহড়ার পরে ভারত সরকারের এই রকম সিদ্ধান্তের কথা জানতে পেরে চিন সরকার এক রকম বিচলিতই, কারণ বাম-সাম্রাজ্যবাদী চীনের প্রতি এমন অনমনীয় মনোভাব মোদী সরকারের আগে কোন সরকারের থেকেই দেখা যায়েনি।
হিন্দুস্তান
এরিনটিক্স লিমিটেডের তৈরি দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট
এই মাল্টি-রোল হেলিকপ্টারটির অধিকাংশ যন্ত্রই ভারতে তৈরি। আসলে ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হ্যাল এলসিএইচ ধ্রুব হেলিকপ্টারেরই আরমার্ড ভ্যারিয়েন্ট হল এই হ্যাল এএলএইচ রুদ্র। এই একই ধরণের ইঞ্জিন থাকবে ভারতের তৈরি এলসিএইচ অ্যাটাক হেলিকপ্টারে।
২০০৫-০৬
নাগাদ হ্যাল ধ্রুব হেলিকপ্টারকে খুব বেশি মডিফিকেশন না করেই একটা আরমার্ড
ভ্যারিয়েন্ট তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। পরিকল্পনা মাফিক ২০০৭ এর মধ্যেই হ্যাল এএলএইচ
রুদ্রর একটা প্রোটোটাইপ তৈরি করে সফলতার সঙ্গে পরীক্ষা করা হয়ে। ২০১১ নাগাদ এর
অস্ত্র সমেত শেষ পরীক্ষাতেও সফলতা পাওয়া গেলে ২০১২-র সেপ্টেম্বর নাগাদ সফলতার
সঙ্গে সেনার উপযোগী প্রথম হেলিকপ্টারটি তৈরি হয়ে যায়ে। ২০১২-র শেষে সেনার তরফ থেকে
ইনিসিয়াল অপারেশনাল ক্লিয়ারেন্স(IOC) পেয়ে যাওয়ার পরে ২০১৩ থেকে ফুল ফ্লেজড
প্রোডাকশন শুরু হয়ে।
এই
হেলিকপ্টারটির ন্যাভাল ভ্যারিয়েন্টও একবারেই নৌসেনার প্রয়োজন মেটানোর মতো তৈরি করা
গিয়েছিল, যার ফলে সেনা, বায়ুসেনা ছাড়াও নৌসেনাও এই হেলিকপ্টার ব্যবহার করার জন্য হ্যালের
কাছে অর্ডার দিয়েছে। আপাতত সেনার তিনটে ডিভিশন মিলিয়ে ১০০ টির বেশি হেলিকপ্টারের অর্ডার
দেওয়া হয়েছে হ্যালের কাছে। মনে রাখার বিষয় হল এর মাদার ভ্যারিয়েন্ট অর্থাৎ ভারতীয়
প্রযুক্তিতে তৈরি এলসিএইচ ধ্রুব হেলিকপ্টার কে ইজরায়েল সহ ৫ টার বেশি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে।
ন্যাভাল ভ্যারিয়েন্ট
এই হেলিকপ্টারটি দিনে বা রাত্রে যে কোন রকমের
আবহাওয়াতে, যে কোন
ধরণের সামরিক অভিযান চালাতে সক্ষম। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী উচ্চতায় অপারেশন চালাতে
অত্যন্ত কার্যকরী । ৫০০০
মিটারের বেশি উচ্চতায়ে অবস্থিত সিয়াচেনের উপর দিয়েও কোন রকমের সমস্যা ছাড়াই এই হেলিকপ্টারটি
উড়তে সক্ষম। পাহাড়ি লড়াইতে এশিয়া
মহাদেশে এই হেলিকপ্টারের জুড়ি মেলা ভার। জানলে অবাক হবেন কোন
রকমের পরিবর্তন ছাড়াই হেলিকপ্টারটি অস্ত্র এবং মানুষ একসঙ্গে বহন করতে পারে ।
- সংক্ষেপে দেখে নেওয়া যাক দেশি হেলিকপ্টারটির কিছু বৈশিষ্ট্যঃ-
- · অস্ত্রে সুসজ্জিত হয়েও ১২ জন মানুষ বহন করতে পারে।
- · ৫,৫০০ কিলো ওজন সমেত উড়তে পারে যা লাইট হেলিকপ্টারদের মধ্যে সব থেকে বেশি।
- · সর্বোচ্চ ২৯০ কিমি/ঘন্টা বেগে উড়তে সক্ষম।
- · ট্যাঙ্ক ভর্তি জ্বালানি নিয়ে একটানা ৩২০ কিমি উড়তে পারে।
- · ৬,০৯৬ মিটার বা ২০,০০০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত উড়তে পারে।
- হাতিয়ারঃ-
- · একটি ২০মিমি এম৬২১ কামান।
- · দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ৮ টা নাগ অ্যান্টি ট্যাঙ্ক মিসাইল।
- · চারটে এমবিডিএ মিস্ট্রাল(ফ্রান্সে তৈরি) এয়ার টু এয়ার মিসাইল।
- · একটি ৭০ মিমি রকেট লঞ্চার(পড)।
- · দুটো টরপিডো অথবা ডেফট্ চার্জ(নেভাল ভ্যারিয়েন্ট)।
- · দুটো অ্যান্টি-শিপ মিসাইল(নেভাল ভ্যারিয়েন্ট)।
- · দুটি ব্রহ্মোস মিসাইল।
- · সুইডেনে তৈরি সাব(SAAB) আইডিএএস-৩ সেল্ফ প্রোটেকশন কিট্।
This comment has been removed by the author.
ReplyDeleteWe want more Made In India products.. Love my India
ReplyDelete"I am Indian, and I'm proud of it.
ReplyDeleteJAY HIND
ReplyDelete