Saturday 5 August 2017

চীনের ডোকলাম আগ্রাসনে লাভবান ভারতের কুটির শিল্প, বাজারে নেই চীনা রাখী





কলকাতা ও দিল্লীঃ- মাসুদ আজাহার থেকে ডোকলাম আগ্রাসন, ভারত-চিন সম্পর্কের মধ্যে টালমাটাল অবস্থার ফলে শেষ কয়েক মাস ধরে দেশের ভিতরে চিনা পণ্য বর্জনের জন্য জাতিয়তাবাদি-দের ব্যাপক প্রচার চোখে পরেছে। পালটা যদিও বামপন্থীরা ঘুর পথে প্রচার করে সব রকমের প্রচেষ্টাই চালিয়েছিল চিনা পণ্য বর্জনের প্রচারকে ব্যর্থ করতে। তবে তারা সফল হতে পারেনি। এর ফলে লাভবান হয়েছিল আমাদের দেশের গরীব কুটির শিল্পীরা।

  গত বছর দিপাবলির আগে চিনা দ্রব্য বর্জনের ব্যাপক প্রচারের ফলে হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি ব্যবসা হারিয়েছিল চিন। আর আমাদের দেশের কুটির শিল্পে তৈরি হওয়া প্রডাক্টের বিক্রি বৃদ্ধি পাওয়াতে ঐ হাজার কোটি টাকার প্রায়ে পুরোটাই বাড়তি লাভ করেছিল এই দেশের গরীব কুটির শিল্পীরা। এবার রাখী-বন্ধন উৎসবে চিনা দ্রব্য বর্জনের পালা।

  রাখীবন্ধনে ভাইদের রক্ষাসূত্র বাঁধতে শত্রু দেশের পণ্য ত্যাগ করল ভারতীয় বোনেরা। দেশ ও সেনা ভাইদের ত্যাগের কথা মাথায়ে রেখেই বোনেরা ত্যাগ করছে চিনা রাখী। তবে শুধু মাত্র বোনেদের কথা বললেই হবে না, চিন থেকে রাখীর আমদানিটাও কমিয়েছে দেশিও ব্যবসায়ীরা। যার ফলে কয়েক’শো কোটি টাকার লোকসানও দেখতে হচ্ছে চিন-কে।


  সমীক্ষা বলছে মূলত দিল্লী সহ গোটা উত্তর ভারতের ব্যবসায়ীরা সস্তা হওয়া সত্যেও চিনা রাখী আমদানি করতে অস্বীকার করছে। উপরন্তু দামে সামান্য বেশি হওয়া দেশের কুটির শিল্পে তৈরি রাখী গুলোই তারা বেচতে চাইছে। সচেতন ভারতীয় ক্রেতাদের বক্তব্য, 'উত্‍‌সবের সময় শুধু রাখি বেচেই চিনারা কোটি কোটি টাকা ভারত থেকে নিয়ে যাচ্ছে। ঘুর পথে সেই টাকাই ভারত বিরোধিতায় খরচ করছে। ওদের উচিৎ শিক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।'

  বড় কারবারিরা জানাচ্ছেন, ডোকালাম নিয়ে চিনের ক্রমাগত হুমকির ফলেই সচেতন ভাবেই লোকজন চিনা পণ্য বয়কট করছেন। যার ফলে রক্ষাবন্ধনের আগে ভারতীয় বাজারে এবার চিনা রাখির চাহিদাই নেই ।দাম কম, দেখতে ভালো, চিনা রাখি মনমোহনের বাম সমর্থিত UPA-1 সরকারের সময় থেকে সহজেই ভারতীয় বাজার ধরে ফেলেছিল। কিন্তু বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টাতে ক্রেতাদের সজাগ করে তোলার পর থেকেই কম দাম হওয়া সত্ত্বেও ভারতে বিকোচ্ছে না চিনা রাখী।

  গত বছর পর্যন্তও এই চিনা রাখীর চাহিদা ছিল তুঙ্গে, এবার তার সিকিভাগও নেই। বিক্রেতারাদের বক্তব্য, এর সবথেকে বড় কারণ ডোকালামে বাম দেশটির সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন। এই আগ্রাসনের যোগ্য জবাব অবশ্য ভারত সরকার দিচ্ছে, চীনের কোন হুমকির কাছে মাথা নত না করে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে সেনাকে না সরিয়ে তারা বুঝিয়ে দিচ্ছে, মোদী সরকারের বিদেশনীতি পূর্বসূরিদের মতো দুর্বল নয়ে। দেশের নিরাপত্তার সঙ্গেও এই সরকার কোন রকমের সমঝোতা করতে কোন মুল্যেই রাজি নয়ে। পার্লামেন্টে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ঘোষনা করেছেন,"বাম দেশ চিন যতক্ষন না সেনা প্রত্যাহার করছে এবং ডোকলামের জমি দখলের উদ্যোগ থেকে সরে আসছে, ততক্ষণ ভারত সেনা প্রত্যাহার করবে না"। মোদী সরকার আইনের রদ বদল করে একের পর এক সেক্টরে (ডেয়ারি,বিদ্যুৎ,মোবাইল,ইলেক্ট্রনিক্স,ফার্মা ইত্যাদি) চিনা কোম্পানি এবং চিনে তৈরি দ্রব্য গুলোকে ব্যান অথবা দ্রব্য গুলোর আমদানি কম করছে। আর সরকারের এই মানসিকতাকেই দেশবাসী সার্বিক ভাবে সমর্থন করে একের পর এক চিনা দ্রব্য বর্জন করে অর্থনৈতিক ভাবে চিনকে আরও চাপে ফেলছে, যার ফলে দিন দিন আরও বেশি লাভবান হচ্ছে আমাদের দেশের গরীব কুটির শিল্পীরা।

উল্লেখ্যঃ- চীনে রাখি-বন্ধন উৎসব হয়ে না, কিন্তু ভারতে এই উৎসবের জন্য কয়েক’শো কোটির ব্যবসা হয়ে থাকে। আর সেই বাজারের দিকে তাকিয়েই শুধু মাত্র ভারতের বাজারের জন্যই চিন বিশেষ ধরণের ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ড বা রিস্ট ব্যান্ড তৈরি করে যা আমাদের দেশে রাখী হিসাবে বিক্রি হয়ে।


                                                     চিনে তৈরি রাখী

1 comment:

loading...
loading...