কলকাতা ও দিল্লিঃ- ডোকলাম ইস্যু নিয়ে ভারতের করা অবস্থান এবং পূর্ববর্তী সরকার গুলোর মতন চিনের আগ্রাসী মনভাবের কাছে মাথা নত না করা ভারতকে দেখে অবাক হচ্ছে সারা বিশ্ব। মাত্র কয়েক বছর আগেই যে চিন, ভারতের সীমান্তের ভিতর সেনা ঢুকিয়ে দৌলত বেগ ওল্ডিতে ঘাটি গাড়িয়ে ২১ দিন ধরে বসিয়ে রেখেছিল এবং তৎকালীন ভারতের কংগ্রেস সরকার আবেদন নিবেদন ছাড়া আর কিছুই করেতে পারেনি। এখন সেই চিনের সেনার চোখেই চোখ রেখে দেড় মাসের উপরে ঐ একই ভারতীয় সেনা দেশের বাইরে বেরিয়ে ভুটানে গিয়ে চিনের বামপন্থী সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন থেকে ভুটানকে রক্ষা করছে। এই অবস্থায়ে চিন প্রত্যেক দিনই কিছু না কিছু হুমকি দিয়েই চলেছে, আর ভারত সরকার এবং তার দেশভক্ত সমর্থকরা প্রত্যহ ঘুর পথে কিছু না কিছু চৈনিক পণ্যকে বর্জন করাচ্ছেন। যার ফলে শেষ কয়েক সপ্তাহে কয়েক’শো কোটি টাকার লোকসান হয়েছে চিনের। এবার এই লিস্টে নতুন সংযোজন ১৩০ কোটি মার্কিন ডলারের চিনা বিনিয়োগ ফিরিয়ে দেওয়া।
চিনের 'সাংঘাই ফোসুন ফার্মাস্যুটিক্যাল গ্রুপ' ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার
বিনিয়োগ করতে চেয়েছিল ভারতের মাল্টি-ন্যাশনাল ফার্মা কোম্পানি 'গ্ল্যান্ড ফার্মা
লিমিটেড'-এ। গ্ল্যান্ড ফার্মা লিমিটেড পৃথিবীর হাতে গোনা কয়েকটা কোম্পানির মধ্যে
একটা, যাদের কাছে মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রের বাইরে ওষুধ তৈরি করে ঐ দেশে বিক্রির অনুমতি
রয়েছে। উল্লেখ্য এই মার্কিন দেশ পৃথিবীর বৃহত্তম ওষুধের বাজার, আর সেই বাজারের
দিকে তাকিয়েই এই বিনিয়োগ করতে চেয়েছিল চিনের এই ফার্মা কোম্পানিটি। সব কিছু প্রায়ে ঠিকই হয়ে গিয়েছিল। শেষ মুহূর্তে বাধ সাধল নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে থাকা বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত পার্লামেন্টারি কমেটি।
ভারতে বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত পার্লামেন্টারি কমিটি রয়েছে যার
প্রধান দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজেই। গত সপ্তাহেই এই বিনিয়োগকে ফিরিয়ে দেওয়ার
সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে ঐ কমিটি। চিনের সরকারি পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস এক রকম হুমকির
সুরেই জানিয়েছে,"এই বিনিয়োগ ফেরানোর ফল ভুগতে হতে পারে ভারতকে, কারণ এর ফলে অদূর
ভবিষ্যতে চিনা সংস্থাগুলো ভারতে বিনিয়োগ করার আগে অন্তত্য ১০ বার চিন্তা করবে"।
ফার্মা এমন একটা সেক্টর যা কোন ভাবেই দেশের নিরাপত্তাকে কোন ভাবেই
বিঘ্নিত করে না, তবুও এমন একটা সেক্টর থেকে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলারের বিদেশি
বিনিয়োগ ফিরিয়ে দিয়ে মোদি সরকার সরাসরি চিনকে বার্তা দিল বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।
ভারতে বিভিন্ন বামপন্থী নেটিজেন-রা চিনা পণ্য নিষিদ্ধের কথা উঠলেই পোষ্ট গুলো
কে কাউন্টার করে বারংবার প্রশ্ন তোলে চিনা পণ্য ব্যান বা চিনা বিনিয়োগ ফেরাচ্ছে না
কেন মোদি সরকার?! এই ঘটনার পর অনেক মোদিপন্থী নেটিজেনরাই মনে করছেন চিনা পণ্য
নিষিদ্ধের পোষ্ট গুলো কে কাউন্টার করে ঘুর পথে চিনা পণ্য গুলোকে সমর্থন করা ঐ
নেটিজেনরাও বিশেষ বার্তা পাবে।
তবে কে কী বার্তা পাবে সেটার থেকেও বড় বিষয় হল মোদি সরকার ২০১৪ সালে যে নেশন ফার্স্ট নীতি গ্রহন করেছিল, তিন বছর পরেও সেই নীতি থেকে এক চুলও নড়েনি সেটা পরিস্কার বোঝা গেল। ভারতে নিশ্চিন্তে ব্যবসা করে সেই টাকা দিয়ে হাতিয়ার কিনে সেই হাতিয়ার দেখিয়েই ভারতকে ভয় দেখানোর দিন মনে হয়ে এই ভাবেই শেষ হতে চলেছে। ডোকলাম সমস্যার মধ্যেও ভারত সরকারের এই সাহসী সিদ্ধান্ত কিন্তু পরিস্কার ভাবে ইঙ্গিত করছে আন্তর্জাতিক স্তরে মাথা উঁচু করে চলা এক নতুন ভারতের দিকে।
তবে কে কী বার্তা পাবে সেটার থেকেও বড় বিষয় হল মোদি সরকার ২০১৪ সালে যে নেশন ফার্স্ট নীতি গ্রহন করেছিল, তিন বছর পরেও সেই নীতি থেকে এক চুলও নড়েনি সেটা পরিস্কার বোঝা গেল। ভারতে নিশ্চিন্তে ব্যবসা করে সেই টাকা দিয়ে হাতিয়ার কিনে সেই হাতিয়ার দেখিয়েই ভারতকে ভয় দেখানোর দিন মনে হয়ে এই ভাবেই শেষ হতে চলেছে। ডোকলাম সমস্যার মধ্যেও ভারত সরকারের এই সাহসী সিদ্ধান্ত কিন্তু পরিস্কার ভাবে ইঙ্গিত করছে আন্তর্জাতিক স্তরে মাথা উঁচু করে চলা এক নতুন ভারতের দিকে।
No comments:
Post a Comment