Wednesday 2 August 2017

বিজ্ঞান প্রমাণ করলো আর্যরা বিদেশী নয় ভারতীয়, হিন্দুত্ববাদিরাই সঠিক





হায়েদ্রাবাদঃ- একাধিক দেশের বিজ্ঞানিদের সমন্বয় তৈরি একটি গবেষকদের দল গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করছে শক, হুন,আরব, তুর্কি, মুঘল, ইউরোপীয় দের মত আর্যরা বিদেশ থেকে আগত কোন জাতি নয়ে, তারা ভারতীয় এবং ঐ শক, হুন,আরব, তুর্কি, মুঘল, ইউরোপীয় দের মত কোন দিনই বিদেশ থেকে ভারত আক্রমণ করতে আসেনি । 
  আর্য আক্রমণের ব্যাপকভাবে বিশ্বাসী তত্ত্ব(তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই), ভারতীয় উপমহাদেশে মহাজনপদ গুলোর সৃষ্টি ব্যাখ্যা করার জন্য প্রায়ই ব্যবহৃত হয়, এটি একটি ধারণা মাত্র কোন সত্য ঘটনা বা ইতিহাস নয়, ভারতীয় জেনেটিক রিসার্চারদের একটি নতুন গবেষণার ফলে এই তথ্যই উঠে এলো। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রাপ্ত জেনেটিক বৈচিত্রের উৎপত্তি ৩,৫০০ বছরের(যখন ইন্ডো-আর্যদের ভারতে স্থানান্তরিত হওয়ার কথা) অনেক আগেই তৈরি , সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি (CCMB), হায়দ্রাবাদের বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বে একটি নতুন গবেষণার ফল এটাই বলছে। ২০১২ সালে, প্রধানমন্ত্রী মন মোহন সিং-র সময় এই গবেষণার রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর আমেরিকার জার্নাল অব হিউম্যান জেনেটিক্সে এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। সঙ্গে পৃথিবীর অন্যতম বিখ্যাত নেচার ম্যাগাজিনও এই গবেষণা কে স্বীকৃতি দিয়ে নিজেদের ম্যাগাজিনে প্রকাশিত করেছে । 

  আর্য আক্রমণের ধারণাটি জার্মান ভাষাবিদ ও সংস্কৃত বিশেষজ্ঞ ম্যাক্স মুলার উনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে প্রদান করেছিলেন । তিনি বলেছিলেন, "৩,৫০০ বছর আগে, মধ্য এশিয়ার ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাভাষী মানুষদের একটি নাটকীয় স্থানান্তর, সমসাময়িক দক্ষিণ এশিয়া জনসংখ্যার আকার ধারণ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল অর্থাৎ সেই সময় মধ্য এশিয়ার ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাভাষী মানুষদের একটি শাখা ভারতে চলে আসে এবং এটি ভারত-ইউরোপীয় ভাষা পরিবার এবং ভারতে বর্ণ প্রথা বা জাতিভেদ প্রথার প্রবর্তনের জন্য দায়ী ।" 
 
  গবেষণা দলের নেতৃত্বে থাকা CCMB-র গবেষক ডঃ কুমারস্বামী থাঙ্গারজ বলেছেন, "আমাদের গবেষণায় ধরা পড়েছে ৩,৫০০ বছর আগে কোন জেনেটিক প্রবাহ ঘটেইনি" । এই গবেষকদের দলে ছিলেন এস্তোনিয়ার তারতু বিশ্ববিদ্যালয়, চ্যাটিনাড একাডেমী অব রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন, চেন্নাই এবং বানারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক গবেষক । CCMB-র প্রাক্তন পরিচালক,বানারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং এই গবেষণার একজন সহকারী ডঃ লালজী সিং বলেছেন,"এটাই সঠিক সময় বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ভারতের প্রাগৈতিহাসিক পুনর্নির্মাণের"। "ভারতকে যে আর্যরা আক্রমণ করেছিল অথবা বিদেশ থেকে ভারতে যে আর্যরা এসেছিল সেটার কোন জেনেটিক প্রমাণ নেই অর্থাৎ আর্য নামক কোন বিদেশী জাতির পৃথক ভাবে কোন অস্তিত্বই নেই"। 

  গবেষকগণ ছয় লক্ষ বিট জেনেটিক তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন SNP তৈরি করে, যা সংগ্রহীত হয়েছিল ভারতের ৩০ টি জাতিগোষ্ঠী সহ ১১২ টি জনগোষ্ঠীর ডিএনএ থেকে । অন্যান্য জনগোষ্ঠীর জেনেটিক তথ্য দিয়ে এই তথ্য তুলনা তারা দেখিয়েছেন যে দক্ষিণ এশিয়ার দুটি প্রধান বংশানুক্রমিক উপাদান রয়েছে । এক যাদের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়ে দক্ষিণ ও পশ্চিম এশিয়া, মিডিল ইস্ট, পূর্ব ও ককেশাস অঞ্চলের জনগোষ্ঠী গুলোর সঙ্গে । দ্বিতীয় অংশটি প্রধানত দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ এবং ভারতীয় জনসংখ্যার 50 শতাংশেরও বেশী এই জনগোষ্ঠীর বংশধর। গবেষকেরা আরও বলেছেন "দক্ষিণ এশিয়ায় জেনেটিক পার্থক্যকে প্রভাবিত করে এমন উভয় পূর্বপুরুষদের উপাদানই পশ্চিম ইউরেসিয়ার তুলনায় অনেক বেশি বৈচিত্র্যময় এবং প্রাচীন । এই উপাদানের প্রাচীনত্ব আরও একটি ভিন্ন এবং প্রাচীন ডেমোগ্রাফিক ইতিহাসের লক্ষণ যা প্রায়ে ৭০,০০০ বছরের পুরানো এবং দক্ষিণ এশীয় জিনোমের বৈচিত্র পশ্চিম ইউরেসিয়ার জিনোমের বৈচিত্রের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর । অর্থাৎ ৩৫০০ বছর আগে পৃথক জিন বিশিষ্ট কোন বিদেশী মানব জাতির আগমন ভারতে ঘটেনি । এক্ষেত্রে উল্লেখ্য আর্য জাতিকে বর্তমান ইউরোপিও ফর্সা এবং অনার্য জাতিকে কালো আফ্রিকানদের সমগোত্রীয় অর্থাৎ সম্পূর্ণ ভিন্ন জেনেটিক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন মানব জাতি বলে ধারণা করা হয়ে থাকে । 

  এস্তোনিয়ার তারতু বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞানেশ্বর চৌবে বলেছেন, "এদেশের বাইরে যে জিনগত উপাদানটি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তা পৃথিবীর যে কোনও অংশের তুলনায় ভারতে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এর অর্থ, এই জেনেটিক উপাদানটি ভারতে উৎপন্ন হয়েছে এবং তারপর ধীরে ধীরে পশ্চিম এশিয়ায় এবং ককেশাস অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে "। এক কথায়ে আর্য জাতি মধ্য এশিয়া/বিদেশ থেকে ভারতে আসেইনি উপরন্তু ভারত থেকে মধ্য এশিয়া/বিদেশে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভবনাটাই প্রবল । মনে রাখার বিষয় হিন্দুত্ববাদিরাও বহু বছর ধরেই যে দাবি করে আসছে বা হিন্দুত্ববাদিদের দাবির সঙ্গে অদ্ভুত ভাবে বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফলের অনেকটাই মিল ।   



   যদি মধ্য এশিয়া থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় কোন মানব জাতির স্থানান্তর ঘটত তবে তার কোন না কোন প্রমাণ গবেষণায় ধরা পড়তো এবং এটি ভারতীয়দের জিনের উপাদানে ধরা পড়তো কিন্তু এই পূর্বপুরুষের উপাদান এই অঞ্চলের মানবগোষ্ঠীর শরীরে অনুপস্থিত কারণ, তাই আমাদের এই উপসংহারে আসা উচিত , আর্য আক্রমণের ব্যাপকভাবে বিশ্বাসী তত্ত্বটা(তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই) একটা ভ্রান্ত ধারণা ছাড়া আর কিছুই না । 

সূত্রঃ- India Today, The Hindu, DNA News, Nature Magazine, Journal of Human Genetics

5 comments:

  1. অসাধারন প্রতিবেদন... ভবিষ্যতে এমন তথ্যপূর্ণ আরো লেখা আশা করব...

    ReplyDelete
  2. হিন্দুত্বের জয় হোক

    ReplyDelete
  3. জয় শ্রীরাম

    ReplyDelete
  4. সুত্র গুলোর লিংক পেলে ভাল হত |
    ///সূত্রঃ- India Today, The Hindu, DNA News, Nature Magazine, Journal of Human Genetics///

    ReplyDelete

loading...
loading...