Friday 18 August 2017

ডোকলাম নিয়ে প্রবল চাপে চিন




কলকাতা ও দিল্লীঃ- ডোকলামে ভারত ও চিনের মুখোমুখি অবস্থানের প্রায়ে দু’মাস হতে চলল। এখনও এই সমস্যার কোন সুরাহা পাওয়া যায়ে নি। চিনের তরফ থেকে হুমকিরও কোন অভাব নেই। কিন্তু ভারতীয় প্রশাসন অদ্ভুত ভাবে শান্ত। তাদের মুখে একটাই বক্তব্য, আলোচনা করতে হবে এই সমস্যা নিয়ে। যদিও চিন আগেই সরাসরি জানিয়ে দিয়েছিল তারা এই ইস্যু নিয়ে ভারতের সঙ্গে কোন আলোচনাই চায়ে না।

  ডোকলাম যে চিনের কাছে অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং মাথা ব্যাথার বিষয়ে হয়ে উঠেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রায়ে প্রথম থেকেই শুরু করা সাই-ওয়াড় বা মানসিক যুদ্ধেই ভারত হেরে যাবে বলে ভেবেছিল চিন। তাই তাদের মিডিয়ার মাধ্যমে ওরা প্রথমে বিভিন্ন হুমকি দেওয়া শুরু করে। এরপর ভারতের বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলোর অভিযোগ গুলোকে এমন কি হিন্দুত্ব-কেও এই সমস্যার জন্য দায়ী করে বাম সাম্রাজ্যবাদী দেশটি। যদিও এর ফলেই ফেঁসে গেছে চিন, কারণ ঐ সব ফাঁকা আওয়াজে ভারত ভয়েতো পায়েইনি উল্টে চিনের এই রকম ব্যবহারের জবাব দিতে এক এক করে ১০০ টার বেশি চিনা পণ্যের আমদানি বন্ধ অথবা আমদানির ওপর বারতি শুল্ক অথবা নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেয়। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী শুধুমাত্র রাখি-বন্ধনেই চিনা সামগ্রী বর্জন ও দেশি সামগ্রীর ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে চিন ১৫০ কোটি টাকার বেশি লোকসান করেছে।

  এরই মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছে ডোকলামের এই সমস্যা সমাধানের জন্য যেন চিন এবং ভারত আলোচনাতে বসে। সঙ্গে আরও বলা হয়েছে(অনেকের মতে হুশিয়ারি দিয়ে) চিন যেন এই আলোচনা করার সময়ে কোন ভাবেই সেনা প্রত্যাহারের জন্য এবং চিনের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য ভারতকে চাপ না দেয়।

  নেপালকে ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার উদ্যোগে চিনের কূটনীতিকরা কথা বার্তা শুরু করলে নেপালও স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, যে তারা কোন ভাবেই ভারতের বিরুদ্ধে যাবে না।
ভুটানের অঞ্চল ডোকলাম-কে রক্ষা করার জন্য ভারত যা করছে তাতে তাদের সমর্থন রয়েছে একথাও ভুটানের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।

  ভিয়েতনাম পরিষ্কার ভাবে বলেছে ওরা ভারতের পাশেই রয়েছে।

  গদের উপর বিষ ফোড়ার মতন জাপানও জানালো ডোকলামে চিনের দুরভিসন্ধির বিরুদ্ধে তারাও সার্বিক ভাবে ভারতের পাশে রয়েছে। জাপান ও ভিয়েতনাম চিনের আগ্রাসী মনোভাব সম্পর্কে সব থেকে বেশি ওয়াকিবহল, কারণ এই দুটি দেশের সঙ্গেও চিনের সিমান্ত ঝামেলা চলছেই।

  এই অবস্থায়ে দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে তাতে একটা জিনিস পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে চিন ডোকলাম নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে পরে গেছে। ওরা এত হুমকি দেওয়ার পর এখন না পারছে সেনাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে, আন্তর্জাতিক মহল থেকে দিন দিন ক্রমশ চাপ বাড়ার ফলে এবং ভারতের তরফ থেকে রোজই কিছু না কিছু আর্থিক ঝটকা খেয়ে না পারছে ওখানে সেনার দখলদারিকে বজায়ে রাখতে। এক কথায়ে এখন চিনের অবস্থা সাপের ছুঁচো গেলার মতন। যা বিজেপি-র অনেক কর্মী ও সমর্থকেরা দায়ী করছেন নরেন্দ্র মোদি-র বিদেশ সফরের ফলে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সুসম্পর্কের বৃদ্ধি পাওয়া উষ্ণতাকেই।

No comments:

Post a Comment

loading...
loading...